প্রায় আড়াই বছর আগে যশোর আ. লীগের
সম্মেলনে সড়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
কাজ শুরুর ঘোষণা দেন
তবিবর রহমান: যশোরের মণিহার-চৌরাস্তা-দড়াটানা-পালবাড়ি সড়ক ডাবল লেন করতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর নির্দেশ আড়াই বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। প্রায় আড়াই বছর আগে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যশোর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ঘোষণা দিলেও এবিষয়ে কাজই শুরু করা যায়নি। এমনকি মন্ত্রীর নির্দেশ ভুলেই গেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ।
যশোর শহরের পালবাড়ি থেকে পূর্ব দিকে প্রাণকেন্দ্র দড়াটানার বুক চিরে চৌরাস্তা হয়ে রাস্তা মিলেছে মণিহার প্রান্তে। শহরের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে ইজিবাইক, রিকশা, ভ্যানসহ ব্যক্তিগত বাহনের সারি লেগে থাকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। যানজট নিরসনে হিমসিম খায় ট্রাফিক বিভাগ। এ বিষয়টি বিবেচনা করে যশোর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু মণিহার-চৌরাস্তা-দড়াটানা-পালবাড়ি সড়ক ডাবল লেন করার উদ্যোগ নেন। এরই অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে তিনি সড়কটি ডাবল লেন করার দাবি উত্থাপন করেন। মন্ত্রী সম্মেলন মঞ্চে প্রথম অধিবেশনে তার বক্তব্যে মণিহার-চৌরাস্তা-দড়াটানা-পালবাড়ি সড়ক ডাবল লেন করার ঘোষণা দিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাজ করার নির্দেশ দেন। অথচ আজতক মন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোন কাজই শুরু করেনি। বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি এ জেলা শহরের কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনৈতিক নেতৃত্ব। তাই মন্ত্রীর ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে কার্যক্রম।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, নতুন যোগদান করেছি। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশ সম্পর্কে অবগত না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবো। সবার সাথে কথা বলে কিভাবে কাজ শুরু করা যায় সেবিষয়ে চেষ্টা করবো।
সেই সময় দায়িত্ব পালন করা সওজ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয়। মন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে তিনি কোন উদ্যোগ নিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে উত্তর না দিয়ে বলেন, যশোর থেকে চলে আসার সময় সবকিছু অফিস ফাইলে নোট দিয়ে আসা হয়। সেটা দেখলে বোঝা যাবে।
এবিষয়ে যশোর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু বলেন, শহরের মুজিব সড়ক এবং রেল রোড সম্প্রসারণ ও ডাবল লেন করেছিলাম। আর অনেক কষ্ট করে মণিহার-দড়াটানা-পালবাড়ি সড়ক ডাবল লেন করতে মন্ত্রীকে দিয়ে ঘোষণা করিয়েছিলাম। ডাবল লেন পাস করানোর পরও আমার মেয়াদ বেশিদিন না থাকায় বাস্তবায়ন করা যায়নি। এটা নিয়ে হৃদয়ে যন্ত্রণা আছে। তিনি আরো বলেন, শহরবাসীর স্বস্তি দিতে যানজট কমানোর বিকল্প নেই। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি ডাবল লেন হলে স্বাচ্ছান্দ্যে যাতায়াত করা সম্ভব হতো। মন্ত্রীর ঘোষণার পরও কোন কাজ না হলে জনমনে নেতিবাচক ধারণা জন্মায়। ওবায়দুল কাদের শুধু সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী নন; তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। জনপ্রতিনিধিদের নিজ তাগিদ থেকে উপর পর্যায়ে কথা বলে এ কাজটি বাস্তবায়ন করতে হবে।
এবিষয়ে যশোর পৌরসভার বর্তমান মেয়র হায়দান গণী খান পলাশ বলেন, রাস্তাটি ডাবল লেন করার জন্য ব্যক্তিগত চেষ্টা আছে। যেভাবেই হোক রাস্তাটি করা গেলে যানজট কমে যাবে। মানুষের চলাচলে স্বস্তি আসবে।