চোরাচালনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কড়াকড়ি ব্যবস্থাও নিলেও তা থেমে নেই। বিভিন্ন কৌশলে এক শ্রেণির মানুষ এ অবৈধ কাজটি করেই যাচ্ছে। তাদের আচরণ দেখলে মনে হয় তারা সব কঠোরতাকে ড্যামকেয়ার ভাব দেখাচ্ছে। বিজিবি ও পুলিশ বিভাগকে এর বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকা নিতেও দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তার পরও কেন এ অবস্থা তা ভাববার বিষয়। এ দেশে সাধারণত মাদক ও সোনা চোরাচালান হচ্ছে বেশি। বহনকারী বা মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবু চোরাচালানের ¯্রােত থামছে না।
গত ১৩ জানুয়ারি যশোরের শার্শা, শ্যামলাগাছী থেকে এক কেজি ১৬৫ গ্রাম ওজনের ১০ টি স্বর্ণের বারসহ একজনকে আটক করা হয়। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ৮ কোটি টাকা মূল্যের ১০৪টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়েছিল। এভাবে গত তিন বছরে প্রায় একশ কেজি সোনা উদ্ধার করেছে। এতে প্রতিয়মান হয় জেলাটি সোনা চোরাচলানের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এখান থেকে প্রতিনিয়িত ভারতে পাচার হচ্ছে সোনা। কোনভাবে ঠেকানো যাচ্ছেনা চোরাচালান। বৈধ সোনা ব্যবসায়ীরা বলছেন, যে সোনা উদ্ধার হয় তার ২০ গুণ সোনা পাচার হয়ে থাকে।
সোনা চোরাচালানে মূল হোতারা থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তারা টাকার বিনিময়ে লোক দিয়ে পাচার করেন।
সোনা চোরাচালানের এ খবর খবর ১০ ফেব্রুয়ারি দৈনিক কল্যাণে প্রকাশ হয়েছে। চোরাচালান থেমে নেই এ জন্য বলছি যে, প্রায় শোনা যায় পাচার করার জন্য আনা সোনা ধরা পড়েছে। যারা এর সাথে জড়িত তারা এতটাই অপ্রতিরোধ্য যে বার বার ধরা পড়লেও তারা থেমে নেই। অতি সম্প্রতি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সোনার চালান আটক করা হয়। আমরা মনে করি অহেতুক চুনো পুটির পেছনে দৌড়িয়ে চোরাচালান দমনের কাক্সিক্ষত সফলতা পাওয়া যাবে না, যতক্ষণ না এর হোতাদের দমন না করা যাবে। যারা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে, মানুষের অকল্যাণে চোরাচালান ব্যবসা করেও সমাজের মধ্যমণি হয়ে হয়ে বসে আছে তাদের কালো হাত আগে ভাঙতে হবে। পালের গোদাকে সোজা করতে না পারলে অন্য কেউ সোজা হবে না। একজন ধরা পড়বে তো শতেকজন উদয় হবে। বেকার জীবনে লোভনীয় পরিশ্রমিকে কাজের সুযোগ পেলে তারা এদিকে ঝুঁকবেই। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের পিঠে বাড়ি পড়লে চুনোপুটি চোরাব্যবসায়ীদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাবে না। যদি পালের গোদারা নির্বিঘœ থাকে তা হলে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও চোরাচালান চলতে থাকবে।
চোরাচালানীরাতো হিতাহিত জ্ঞান শূন্য মানুষ নামের অদ্ভুত প্রাণি। তারা চোরাচালান করতে গিয়ে ধরা পড়লে তাদের জীবন শেষ এ কথাটি তাদের মাথায় থাকে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের কথা হলো চোরাচালানের শীর্ষের শক্তিকে আগে প্রতিহত করা হোক।