ময়না তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে কালক্ষেপণ
নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০ দিনেও যশোরের আলোচিত পঙ্গু হাসপাতালে নিহত ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ব্যবসায়ী মফিজুর রহমান হত্যা মামলায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। মফিজুর নিখোঁজ যশোর কোতয়ালী থানায় জিডি করা হয়। তিনদিন পর মফিজুরের মরদেহ ওই পঙ্গু হাসপাতালের লিফটের নিচ থেকে উদ্ধার করা হলে হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। আর সুরতহাল রিপোর্টেও মফিজুর রহমানের শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এরপরও এ হত্যা মামলার কোন আসামিকেও পুলিশ আটক করতে পারেনি।
এদিকে ময়না তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে কালক্ষেপণ এবং আসামিদের আটক না করায় সুবিচার পাওয়া নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন নিহতের স্বজনরা। কেননা ময়না তদন্ত রিপোর্ট ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য আলোচিত ও অভিযুক্ত পঙ্গু হাসপাতালের মালিক ডাক্তার আব্দুর রউফ নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন বলে ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ।
জানা গেছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মফিজুর রহমান। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন। মা আছিয়া বেগমের পায়ের চিকিৎসা করানোর জন্য গত ২৭ মার্চ যশোর শহরের মুজিব সড়কের রেলগেটস্থ বহুলালোচিত ডাক্তার আব্দুর রউফের পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩১ মার্চ দুপুরে মফিজুর রহমানের সাথে ডাক্তার আব্দুর রউফের বাকবিত-া হয়। যে কারণে ডাক্তার রউফের ইশারায় মফিজুর রহমানকে হাসপাতাল থেকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় ওই দিনই একটি সাধারণ ডায়েরি করেন নিহতের ছেলে। তিনদিন পরে মফিজুরের মরদেহ বিতর্কিত ও সমালোচিত পঙ্গু হাসপাতালের লিফটের নিচের আন্ডার গ্রাউন্ড থেকে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে ৩ এপ্রিল হত্যা মামলা করেন নিহতের ছেলে শেখ সোয়েব উদ্দিন। কিন্তু মামলা দায়েরের ২০দিন পার হলেও খুনের কারণ ও কোন খুনিকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি ময়না তদন্ত রিপোর্টও আসেনি। তবে সুরতহাল রিপোর্টে নিহতের গলার নিচে প্রায় ১৮ ইঞ্চি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা চিহ্ন ছিলো। ডান হাটুতে এক ইঞ্চির মত কাটা চিহ্ন রয়েছে। ডান হাটু ভাঙ্গা অনুভব করা যাচ্ছে বলে সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে ডাক্তার আব্দুর রউফ ময়না তদন্ত রিপোর্টটি ভিন্নখাতে নিতেও নানা কলাকৌশল অবলম্বন করেছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেছেন। ফলে ময়না তদন্ত রিপোর্টে কালক্ষেপণ করা এবং কোন খুনিদের আটক না করায় ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবার।
এই ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই আবু জুবাইর বলেছেন, অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে মামলাটি করা হয়েছে। সেকারণে ময়না তদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সঠিক খুনের কারণ বোঝা যাচ্ছেনা।
ময়না তদন্তের রিপোর্টের ব্যাপারে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার আব্দুর রশিদ বলেছেন, ময়না তদন্তের পরে লাশের আলামত ভিসেরা রিপোর্টের জন্য রাজশাহী ল্যাবে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রিপোর্ট আসতে কিছুটা সময় লাগে।