জাহাঙ্গীর আলম
পবিত্র ঈদুল আজহা ১৭ জুন। এ সময় সাধারণত প্রতিবছরই বাড়ে মসলার চাহিদা। এটিকে পূঁজি করেই বাজারে বাড়ছে মসলার দাম। অবশ্য আমদানি কম হওয়ার অজুহাতে বাজারে এলাচসহ বিভিন্ন মসলার দাম এখন লাগামহীন। এই পণ্য ছাড়াও প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামই কমবেশি বাড়তি। যে কারণে বাজারে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাজার খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম-আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। শুক্রবার যশোর শহরের কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
শহরের বড় বাজারে পাইকারি দামে এলাচ প্রকার ভেদে কেজি ৩ হাজার ২শ থেকে ৪ হাজার ৫শ টাকা, জয়ত্রী ২ হাজার ৭শ থেকে ৩ হাজার টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৬শ টাকা, কাজুবাদাম ১ হাজার ৫০ টাকা, জিরা ৭২০ থেকে ৮২০ টাকা, জয়ফল ৭২০ টাকা, গোলমরিচ ৭০০ টাকা, কিচমিচ ৫৫০ টাকা, শুকনা ঝাল ৫০০ টাকা, দারুচিনি ৪০০ টাকা, কালোজিরা ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, হলুদ ৩০০ টাকা, আদা ৩০০ টাকা, ধনিয়া ২২০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, তেজপাতা ১৬০ টাকা, পিঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বড় বাজারের পাইকারি বিক্রেতা শ্যামল চন্দ্র জানান, দেশে মসলার বাজার আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ডলারের দাম বাড়ায় আমদানি পর্যায়ে খরচ বেড়ে গেছে। তার প্রভাব পড়ছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। ৮ মে প্রতি ডলারের দাম ১১৭ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে প্রতি ডলারের মূল্য ছিল ১১০ টাকা।
তবে মসলার দাম বৃদ্ধিতে নতুন করে চাপ পড়ছে ভোক্তাদের। হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিকে তারা ‘আগুনের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, ‘বাজার তদারকি কাজে আসছে না’। যে কারণে হু হু করে দাম বাড়ছে। ঈদের আগে দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা বলা যাচ্ছে না।
স্থিতিশীল সবজির বাজারও। তবে কিছু সবজির দাম কমেছে। বাজারে কেজি প্রতি কলা ৫০ টাকা, কচু ১০০ টাকা, কচুরলতি ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাকরোল ৯০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, উচ্চে ১২০ টকা, করলা ৬০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, পটল ২০ টাকা, ঢেঁড়শ ৩০ টাকা, কুমড়ো ৩০ টাকা, ঝিঙে ও ধুন্দল ৪০ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কাঁচা মরিচের ঝাজ আগের মত রয়েছে। বাজারে মানভেদে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে কেজি ২১০ টাকা, সোনালী ৩২০ টাকা, লেয়ার কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৩৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ। চাষের কৈ ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ টাকা, পাঙ্গাস ১৯০ টাকা, ২ কেজি ওজনের রুই ২৮০ টাকা, কাতলা ৩২০ টাকা, গ্লাস ৩৫০ টাকা, সিলভার ২৫০ টাকা, চাষের জিয়েল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, রূপচাঁদা ৬০০ টাকা, ইলিশ ১১০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দ্রব্যমূল্যের এমন পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বাজেটের প্রভাব নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা বলেছেন, বাজারে এখনো বাজেটের প্রভাব পড়েনি। তবে পণ্যের দাম কমাতে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন ছিল।

 
									 
					