নিজস্ব প্রতিবেদক: শুধুমাত্র দিবস পালন করে, প্রতিবাদী গান গেয়ে উদীচী হত্যার বিচার পাওয়া যাবে না। বিচারের জন্য প্রয়োজন কঠোর আন্দোলন। দেশের ইতিহাসে যখন কোন ঘটনা রাজনীতিকরণ হয়েছে তখন সেই ঘটনার বিচার সহজে পাওয়া যায়নি।
গতকাল রোববার টাউনহল ময়দান রওশন আলী মঞ্চে উদীচী হত্যাযজ্ঞের ২৩তম বার্ষিকীতে প্রতিবাদী আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ যশোর টাউন হল ময়দানে উদীচীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনের অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় নিহত হন ১০ জন। আহত হন দেড় শতাধিক মানুষ। ভয়াবহ এই ট্রাজেডির ২৩ বছর পার হলেও ঘাতকদের শনাক্ত করা যায়নি।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ২৩ বছর পার হয়েছে আগামী ২৩ বছরেও এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই। আমরা প্রতিবছর একটি দিনে ঘটা করে আয়োজন করে দিবস পালন করছি, বক্তব্য দিচ্ছি কিন্তু আসল কোন কাজই হচ্ছে না। এত বড় একটি বর্বর ঘটনার বিচার এবং ঘাতকদের শাস্তি না হওয়ায় এক বুক যন্ত্রণা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন বোমা হামলায় নিহতদের পরিবার ও আহতরা।
বক্তারা আক্ষেপ করে বলেন, জীবদ্দশায় ঘৃণিত এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের শাস্তি হয়তো দেখে যেতে পারবো না। বক্তারা আরও বলেন, শহীদ তপনকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিজে জমি বরাদ্দ দিয়েছিলেন যা আজ বেদখল হয়ে গেছে ফলে তপনের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
উদীচী যশোরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাবুবুর রহমান মজনুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন, উদীচী যশোরের উপদেষ্টা ও দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা একরাম উদ দ্দৌলা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, জাসদ জেলা কমিটির সভাপতি ও উদীচী যশোরের উপদেষ্টা রবিউল আলম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সিপিবি যশোরের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও উদীচী জেলা সংসদের সহ সভাপতি তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাইদ বুলবুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু, উদীচী জেলা সংসদের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু ও কাজী বর্ণ উত্তম।
দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবাদী আলোচনা সভার আগে চিত্র প্রদর্শন এবং বিচারের দাবিতে ক্যানভাসে গণস্বাক্ষর গ্রহণ, জাতীয় সঙ্গীত, প্রতিবাদী গান পরিবেশন করে উদীচী জেলা সংসদের শিল্পীরা। পরে রওশন আলী মঞ্চের পাশে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মশাল প্রজ¦ালন করা হয়। এ সময় উদীচী যশোর জেলা সংসদ, জেলা আওয়ামী লীগ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জেলা শাখা, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বিবর্তন, সুরধনী, স্পন্দন, সুরবিতন, ক্যাম্পাস থিয়েটার, অগ্নিবীণা, জনউদ্যোগ, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সামজিক সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।