কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভাইয়ের নামে করা মামলা আরেক ভাই’র নামে করে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। মামলা করার ৮ বছর পর চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি যশোর আদালতে আরেক ভাইয়ের নামে দ্বিতীয় মামলাটি করেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার সিংহ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন ফয়লা গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল গাফ্ফার শহরের নদীপাড়ায় একটি ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জের প্রতিষ্ঠান চালু করেন। তার মিটার নম্বর ছিল ২৫৪২০১। এই মিটারে অবৈধ সংযোগের বিষয়টি কালীগঞ্জ উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসের নজরে আসে। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ আগস্টে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এ ঘটনায় তৎকালীন উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী যুগল বন্ধু রায় যশোর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতিষ্ঠানের মালিক আব্দুল গাফফারের বিরুদ্ধে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭৩৩ টাকা জরিমানা আদায়ের লক্ষ্যে মামলা করেন। মামলা নম্বর সিআর-৪১/১৬। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আব্দুল গাফ্ফার কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে থাকেন। ৩ কিস্তিতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা জমা দিয়ে ঢাকায় চলে যান। বর্তমান সেখানেই বসবাস করছেন। পরে কিস্তির টাকা না দেওয়ায় বিষয়টি পুনরায় আদালতে যায়। তখন আসামি হাজির না হওয়ায় আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার।
দীর্ঘদিন পর ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি কালীগঞ্জ উপজেলা আবাসিক সহকালী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার সিংহ বাদী হয়ে আব্দুল গাফফারের বড় ভাই আব্দার আলীর নামে পুনরায় মামলাটি করেন। এবার ৩০৬১৫৩৩৪৪ মিটার নম্বরের বিপরীতে টাকা আদায়ের লক্ষ্যে মামলাটি করা হয়। মামলা নম্বর সিআর-০৬/২৪। মামলায় উল্লেখ করা মিটারের মালিক আব্দুল গাফফারের বড় ভাই আব্দার আলী। আব্দার আলীর বাড়ি পৌরসভাধীন ফয়লা গ্রামে। যার মিটারটির সংযোগ বর্তমানে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে বিদ্যুৎ অফিস। তবে মিটারের বিপরীতে কোন বকেয়া নেই। মামলার ঘটনায় আব্দার আলীর পরিবার বর্তমানে চরম বিপাকে পড়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী আব্দার আলী জানান, আমার ভাইয়ের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ায় একটি মামলা হয়েছিল। যেটি আদালত খারিজ করে দেয়। পরে কালীগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিস থেকে আমার বাড়ির চলমান মিটারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আমার নাম উল্লেখ করে ভাইয়ের টাকা আদায়ের লক্ষ্যে মামলা করেন। আমি একজন কৃষক। একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মামলা আমার বাড়ির মিটারের বিপরীতে করা হয়েছে। যেটা একেবারেই অনৈতিক বলে উল্লেখ করেন কৃষক আব্দার আলী। মামলা করায় আমি পরিবার নিয়ে বর্তমানে চরম বিপাকে পড়েছি।
কালীগঞ্জ উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসের আবাসিক প্রকৌশলী মতিউর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পিডিআর ২০১৩ আইন অনুযায়ী আব্দুল গাফফারের ভাই আব্দার আলীর নামে মামলাটি করা হয়েছে। এখন বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। বিষয়টি নিয়ে আমি এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারবো না।