যশোরের চৌগাছায় সিটি ব্যাংকের তিনটি এজেন্ট শাখায় ২৪ জনকে নিয়োগ দিয়ে তাদের কাছ থেকে জামানতের নামে এক কোটি ২০ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে দুই এজেন্ট ও তার প্রতিনিধি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ১৭ জন বুধবার চৌগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ এবং একইদিন বিকেলে চৌগাছা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বিভিন্ন স্থানে ফটকাবাজির ব্যবসা শুরু হয়েছে। ফটকাবাজরা সাধারণ মানুষকে নানা রকম প্রলোভনে ভুলিয়ে লাখ লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিচ্ছে। এ দিকে এসব নিরীহ মানুষের হা-হুতাশ করা ছাড়া কিছুই থাকছে না। বিষয়টি এমনই যে এ ধরনের ঘটনা এক জায়গায় একটি হলে পর পরই অন্য জায়গায় ঘটছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে একটির সাথে যেন আর একটির পূর্ণমাত্রায় যোগসূত্র রয়েছে।
দারিদ্র্য পীড়িত মানুষ যখন আয়-উপার্জনের কোনো আশার বাণী শোনে তখন স্বাভাবিক কারণে তারা যেন বাঁচার পথ পায়। এ কারণে এনজিও অথবা এ ধরনের কোনো সংস্থা যখন অফিস হাকিয়ে দৃষ্টি নন্দন আনাগোনা শুরু করে তখন সহজ সরল প্রাণ মানুষ তাদের প্রতি ঝোঁকে। আর এই সুযোগে তারা বাগিয়ে নেয় তাদের রক্ত নিংড়ানো টাকা-পয়সা। এ ভাবে তাদের পকেট ভরলে একদিন লাপাত্তা হয়। এ ভাবে কত মানুষ যে পথে বসছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। এর আগে মানুষ দেখেছে ডেসটিনি ও এহসান এস বাংলাদেশ নামে দুটি সাড়া জাগানো কোম্পানি বা এনজিওর ফটকাবাজি কারবার। ডেসটিনি দেশের কত সম্ভাবনাময় তরুণের যে মাথা বিগড়ে তাদের সর্বনাশ করেছে তা হিসাবের বাইরে। আকাশচুম্বী স্বপ্নের জালে তাদেরকে আটকিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ ঝরঝরে করে দিয়েছে। তারা এর পেছনে ছুটে একদিকে চাকরির বয়স হারিয়েছে অন্যদিকে হারিয়েছে অভিভাবকের টাকা-পয়সা। এহসান এস বাংলাদেশ পবিত্র ইসলাম ধর্মকে ভাঙিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের পকেট কেটেছে।
দেশ নিশ্চয় আইনের গন্ডিতে আবদ্ধ। কোনো কিছুই আইনের বাইরে চলতে পারে না। যে ফটকাবাজি সংস্থার কথা আজ মিডিয়ায় আসছে সেগুলো আইনের বাইরের কোনো সংস্থা নয়। কিন্তু তাদের ব্যাপারে সেই আইন কেন প্রয়োগ হচ্ছে না কেন এটা সবার প্রশ্ন। যার যখন যা মনে হবে, তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাই করবে তা হতে পারে না। হতে পারে না একটি তথাকথিত সংস্থা দাঁড় করিয়ে এ ভাবে মানুষকে ঠকিয়ে পথের মানুষে পরিণত করা। দেশের যেখানে সেখানে এই ব্যবসা ফেদে এক শ্রেণির ফটকাবাজ, সাধারণ মানুষের অর্থ লুটে নিচ্ছে আর সরকারের সংশ্লিষ্ট সেবামূলক সংস্থা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে। তারা কি এই ফটকাবাজিদের পৃষ্ঠপোষক?
আমরা মনে করি এনজিও সংস্থাগুলোর প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা সরকারের কর্তব্য। যতদূর জানা যায় এ সব সংস্থা সমাজ সেবা ও সমবায় বিভাগ কর্তৃক নিবন্ধিত। পরিদর্শন ও অডিটের দায়িত্ব এ দুটি বিভাগেরই। কিন্তু তারা দায়িত্ব কতটুকু পালন করছে তাও খতিয়ে দেখতে হবে।