আব্দুল্লাহ সোহান, মণিরামপুর: ‘মৌমাছি মৌমাছি/ কোথা যাও নাচি নাচি/ দাঁড়াও না একবার ভাই, ওই ফুল ফোটে বনে/ যাই মধু আহরণে/ দাঁড়াবার সময় তো নাই।’ মৌমাছি কর্মের প্রেরণা। কবিতাটিতেও তাই ফুটিয়ে তুলেছেন কবি। এই মৌমাছির আবাসস্থল এখন একটি বাড়িটি। ৫ বছর ধরে বাড়িটি ঘিরে রেখেছে মৌমাছিগুলো। বসতবাড়ির দেয়াল, জানালার কার্নিশ, এমনকি বাড়ি লাগোয়া আম ও নারিকেল গাছেও মৌমাছি চাক বেধেছে। বাড়িটি এখন মৌমাছির বাড়ি হিসেবে পরিচিত। কেউ বা মৌমাছি দেখতে কেউ বা আসেন ছবি তুলতে বাড়িটিতে। একটু দূর থেকে যে কারো চোখে পড়লে মনে হবে মধু আহরণে বসত বাড়িতে মৌমাছির চাষ করা হয়েছে।
মণিরামপুর উপজেলার বাকোশপোল গ্রামের হাবিবুর রহমান। অবসরপ্রাপ্ত সেনা তিনি। বাড়িটি ঘিরে প্রায় ১০০ মৌ চাক রয়েছে। পরিবারের সঙ্গে মিলে মিশে এশাকার কয়েক লাখ মৌমাছি।
গত ৫ বছর ধরে তার বসতবাড়ির বাইরের দেওয়ালের চারিপাশে মৌমাছি চাক বেধে আছে। শুধু তার বসতবাড়ির দেওয়ালের পাশে নয়; জানালার কার্নিশ,এমনকি বসতবাড়ি লাগোয়া আম ও নারিকেল গাছেও মৌমাছি চাক বেধেছে। তবে, বছরের সব সময় থাকে না। বর্ষাকাল এলেই চলে যায়। আবার খেজুর গুড়ের মৌসুমে চলে আসে।
বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান জানান, ৫ বছর ধরে তার বাড়ির চারিপাশে মৌমাছি চাক বেধে থাকে। সাধারনত বছরের খেজুর গাছ কাটার সময় থেকে তার বাড়িতে মৌমাছি চাক বাধা শুরু করে। এরপর বর্ষা মৌসুম পর্যন্ত মৌমাছির চাক থাকে। তিনি বছরে কয়েক মন মধু পেয়ে থাকেন। তবে, মধু বিক্রি করেন না। আত্বীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশিদের মধ্যে বন্টন করে দেন।
তিনি বলেন, প্রথম দিকে ঘরে মৌমাছির জন্য বেশ যন্ত্রণা পোহাতে হতে হতো। প্রতিবেশি অনেকের বাড়িতে মৌমাছি উড়ে গিয়ে জ্বালাতন করতো। অনেকে মৌমাছির কামড়ের শিকার হতো। এ কারণে প্রথম দুই-এক বছর মৌমাছি তাড়াতে চাকের কাছে কেরোসিন তেল দিয়ে রাখতেন। কিন্তু তাতে কাজ হতো না। পরে দেখা যেতো আগের চাকের পাশে ফের মৌমাছি চাক বেধেছে। এ কারণে এখন আর কিছু করেন না।
প্রতিবেশি তাসলিমা বলেন, প্রায় সব সময় মৌমাছি তাদের বাড়ি-ঘরে এসে জ্বালাতন করে। একটু তাড়াতেই গেলেই হাল বসিয়ে দেয়। কিন্তু কি করবো? অবলা সৃষ্টি, সেই কারণে এখন সব মেনে নিয়েছেন।