কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষার ফলে ছেলেদের পিছনে ফেলে উপজেলা পর্যায়ে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন একই বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী।
তারা হলেন, উপজেলা শহরের নিমতলা বাজারের নুর আলীর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস জিতু এবং হেলাই গ্রামের রকিব মল্লিকের মেয়ে রুকাইয়া পারভীন। দুজনেই কালীগঞ্জ সলিমুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তারা মোবারক আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এসএসসি-২০২৪ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উভয়েই ১১ শ’ নম্বর পেয়ে যৌথভাবে উপজেলা পর্যায়ে প্রথম হবার গৌরব অর্জন করেন।
উপজেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকারীদের মধ্যে জিতু তার সাফল্যের পেছনে মা সানজিদা খুশির অবদানই বেশি বলে জানিয়েছেন। বাবা নুর আলী একজন কৃষি উদ্যেক্তা হওয়ায় গ্রামের খামার নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। এজন্য মায়ের সার্বক্ষণিক দেখভালেই আজ সে সাফল্যের দেখা পেয়েছে। জিতুর ইচ্ছা আগামীতে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ইন্জিনিয়ারিং পড়বে।
জিতুর এমন সাফল্যে সানজিদা খুশি জানায়, তার দুই মেয়ের মধ্যে জিতু ছোট। বড় মেয়ে সানজানা নুসরাত ঐশি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত এ ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী। তার ইচ্ছা মেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবেন। মেয়ের এমন সাফল্যে তিনি স্কুল শিক্ষকসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও দোয়া প্রার্থনা করেছেন।
যৌথভাবে প্রথম অপরজন রুকাইয়া পারভীন এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। তার বাবা রাকিব মল্লিক পেশায় একজন ইজিবাইক চালক ও মাতা গৃহিণী। তিন বোনের মধ্যে ছোট রুকাইয়া।
রুকাইয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তার বড় বোন শারমিন আক্তার প্রাইমারি শিক্ষিকা। মেঝো বোন শাহানাজ পারভীন বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। স্বল্প আয়ের পরিবারে শত অভাবের মাঝেও বাবা তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। রুকাইয়ারও ইচ্ছা আগামীতে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ইন্জিনিয়ারিং পড়বে। অন্যদের মত বেশি প্রাইভেট পড়তে না পারলেও বাবা মায়ের অনুপ্রেরণায় আজ সে কাঙ্খিত সাফল্যে পৌঁছেছে।
সলিমুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বিদৌরা আক্তার জানান, এবারের উপজেলা পর্যায়ে যৌথভাবে প্রথম দুজনই তার বিদ্যালয়ের ছাত্রী। দুজনই মেধাবী। ছেলেদের পিছনে ফেলে তাদের সেরা সাফল্যটি বিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করেছে।
তিনি আরও জানান, তার বিদ্যালয় থেকে এবারে পরীক্ষায় ১৭৬ জন ছাত্রী অংশ নেয়। এবং তারা শতভাগ পাস করেছে। এদের মধ্যে ৫৬ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পাওয়ায় উপজেলার মধ্যে সেরা বিদ্যালয়ের সম্মাননা পেয়েছে।
কালীগঞ্জ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা আব্দুল আলিম জানায়, উপজেলায় এসএসসি ও সমমান পযার্য়ে মাধ্যমিক আটটি ও কারিগরি একটি কেন্দ্র থেকে মোট দুই হাজার ৯০৫ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাসের হার ৯২ দশমিক ৭৪। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে- ৩৭০ জন। অপরদিকে মাদ্রাসা পর্যায়ে দুটি কেন্দ্রে মোট ৭০৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৫৮৩ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৪ জন ও পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪।