নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর শহরতলীর পুলেরহাট বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী মো. আব্দুল্লাহর কাছ থেকে ভেজাল কীটনাশক কিনে পুকুরে দেয়ায় ৩ জন মৎস্য চাষির প্রায় ১০ লাখ টাকার রেণুপোনা মারা গেছে। এতে আর্থিকভাবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই ঘটনার বিচার চেয়ে কীটনাশক ব্যবসায়ী মো. আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ৩ মৎস্যচাষি। পুলিশ বলছে, তারা অভিযোগগুলো তদন্ত করছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১০ আগস্ট চাঁচড়া ইউনিয়নের ভাতুড়িয়া পূর্ব পাড়ার মৃত আব্দুল মালেক গাজীর ছেলে মৎস্যচাষি ইউনুচ আলী, চাঁচড়া পূর্ব পাড়ার আখের আলীর ছেলে খাল্লাইদ হোসাইন ও ১১ আগস্ট তফসীডাঙ্গার হাবিবুর রহমানের ছেলে ইমরান হাসান পুলেরহাট বাজারের রহিম ট্রেডার্সের মালিক মো. আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাদের অভিযোগ, মো. আব্দুল্লাহর দোকান থেকে তারা পোকা মারার ওষুধ সুমিথিয়ন ক্রয় করেছিলেন। যা পুকুরে প্রয়োগের কারণে ইউনুচ আলীর ১ লাখ ২০ হাজার টাকার রেণুপোনা, আখের আলীর ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকার রেণুপোনা ও ইমরান হাসানের ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকার রেণুপোনা মারা যায়। তাদের দাবি, মো. আব্দুল্লাহ ভেজাল সুমিথিয়ন বিক্রি করেন। ওই সুমিথিয়ন পোকা মারার জন্য কিনে পুকুরে প্রয়োগ করার কারণে তাদের রেণুপোনা মারা গেছে।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি মো. তাজুল ইসলাম জানান, কয়েকজন মৎস্যচাষি একজন কীটনাশক বিক্রেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ তদন্ত করতে চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চাঁচড়া পুলিশ ফাঁিড়র ইনচার্জ ইনসপেক্টর তারিকুল ইসলাম জানান, তারা তদন্ত করছেন।
অপরদিকে সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী মো. আব্দুল্লাহ রোববার চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আজিজুল ইসলামসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেছেন। অভিযুক্ত অপর দুজন হলেন, ভাতুড়িয়া গ্রামের রওশন আলীর ছেলে আব্দুল গফ্ফার ও তফসীডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল আহাদের ছেলে মামুন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, পুলেরহাট বাজারে তার রহিম ট্রেডার্স নামে একটি সার ও কীটনাশকের দোকান রয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তারা গোপনে লোকজন দিয়ে দোকানে অথবা বাড়িতে অবৈধ মালামাল রেখে তাকে হয়রানি করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। এ কারণে তিনি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ভেজাল কীটনাশক বিক্রি এবং মৎস্যচাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন অভিযোগ এনে গত ৭ আগস্ট ব্যবসায়ী মো. আব্দুল্লাহর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। এ ঘটনায় তিনি ৮ আগস্ট কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ১০ আগস্ট পুলিশ চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আজিজুলসহ ভাতুড়িয়ার আব্দুল গফ্ফার ও তফসীডাঙ্গার মামুনকে ধরে নিয়ে যায়। পরে স্বজনেরা ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করলে ওইদিন গভীর রাতে থানা থেকে আটকদের ছেড়ে দেওয়া হয়।