নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের বসুন্দিয়া এলাকার মৎস্য ঘের মালিক সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ঘের মালিকদেরকে চাঁদা চেয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন।
সদরের বসুন্দিয়া গ্রামের মৎস ঘের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে পতিত জমি কিনে মাছের চাষ শুরু করি। কয়েকদিন পর বারবাগ গ্রামের সবুজ আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় তার কাছে ঘের লিজ দিতে হবে। এরপরে নিয়মিত চাঁদার দাবিতে মোবাইল এবং সরাসরি হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি তার কাছে ঘের লিজ দিয়ে জীবন নিয়ে ফিরে আসি।
বারবাগ গ্রামের ঘের অধ্যুষিত বিলে গেলে ঘের মালিক আলী হায়দার খান বলেন, এ গ্রামে তার মৎস্য ঘের নিয়ে স্থানীয় সবুজ ও তার সহযোগীরা নিয়োমিত চাঁদা দাবি করে। আমি দিতে অস্বীকার করায় ঘেরে থাকার ঘরে আগুন দিয়ে ঘরটি পুড়িয়ে দেয়। এবং ঘেরের দায়িত্বে থাকা পাহারাদার ও তার ছেলেকে মারধর করে। পরবর্তীতে প্রাণ ভয়ে পাহারাদার তার পরিবার নিয়ে পালিয়ে গেছে।
চাঁদার টাকা দিতে না পাড়ায় হাতের বুড়ো আঙ্গুল কেটে নেওয়া ভুক্তভোগী বসুন্দিয়ার সাদল্ল্যাপুর গ্রামের অসিমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই মধ্য রাতে আমি ও আমার পিতা ঘেরে মাছ পাহারা দিচ্ছিলাম। এসময় হঠাৎ তিন চারজন যুবক এসে আমাকে দেশীয় অস্ত্রের মুখে ফাঁকা মাঠে নিয়ে যায়। এসময় সবুজ ও তার লোকজন বলে, কয়েকবার লোক পাঠানোর পরও তাদের কাছে টাকা কেন দেওয়া হয়নি। পরে তারা আমার হাত পা মুখ বেঁধে চাপাতি দিয়ে আমার হাতের বুড়ো আঙ্গুল কেটে নিয়ে যায়। এঘটনায় মামলা দায়ের করেছি। এখন প্রায় আমাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে বলছে, এর আগে আঙ্গুল কেটেছি, মামলা তুলে না নিলে এবার মাথা কেটে নিবো।
স্থানীয় ঘেরমালিক জামির হোসেন মোল্ল্যা বলেন, সবুজ ও তার সহযোগীরা চাঁদা দাবি করা টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে মারধর করে মোবাইল ও কাছে থাকা কিছু নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এবং বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায় সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে এলাকার ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাধারণ মৎস ঘের মালিকরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শওকত জাহান সুপ্ত বলেন, ঘের মালিকরা ইউনিয়ন পরিষদে এসে বারবাগ গ্রামের সবুজের নামে চাঁদাবাজির লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে সবুজ ও তার সহযোগীদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, তাদের নামে হামলা, মারধর, মাদক মামলাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে থানায়। এলাকায় চাঁদাবাজি মাঝে একটু কম থাকলেও হঠাৎ করে আবার বেড়ে গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্যে জেলা প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে বসুন্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল খান জানান, সম্প্রতি বেশ কয়েকজন ঘের ব্যবসায়ী তাদের সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বারবাগ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী এই সমস্যাগুলো করছে। বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সবুজের সাথে সরাসরি দেখা করে বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।