নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য ড. এএসএম আমানুল্লাহকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে যশোরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন যশোর জেলা কমিটির উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন থেকে দেশের ৩৫শ’ নন-এমপিও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবি করা হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন যশোর জেলার ২৬টি কলেজের শতাধিক শিক্ষক। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা কমিটির সভাপতি প্রভাষক তরিকুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক জসিম উদ্দীন।
মানববন্ধনে বক্তারা তাদের প্রধান দাবিতে এককাট্টা হয়ে ৩৫শ নন-এমপিও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এএসএম আমানুল্লাহকে হত্যার হুমকি প্রদানকারী ব্যক্তিদের দ্রুত আটক ও বিচারের দাবি করেন।
এসময় শিক্ষক নেতা প্রভাষক শরিফুল ইসলাম বলেন, গত ৩২ বছর ধরে প্রায় ৪৯৫টি বেসরকারি কলেজের ৩৫শ জন শিক্ষক এমপিওভুক্তির বাইরে থেকে চরম বৈষম্যের শিকার। এই শিক্ষকরা বেতন-ভাতার অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অথচ সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
শিক্ষক নেতা প্রভাষক মমতাজ পারভীন বলেন, যতদিন না আমাদের এমপিওভুক্তির বিষয়টি সমাধান হবে, ততদিন আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। একইভাবে সদ্য জাতীয়করণকৃত ৩০২টি কলেজের শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হলেও আমাদের এই দাবি অগ্রাহ্য হচ্ছে, যা চরম বৈষম্য।
এছাড়া সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক জসিম উদ্দীন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে সুদৃষ্টি কামনা করে বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমাদের জন্য প্রতি মাসে ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।
এদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকির বিষয়ে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এস এম আমানুল্লাহ শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তবে তার এই উদ্যোগের কারণে একটি বিরোধী মহল তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। গত ৪ নভেম্বর তারিখে উপাচার্যকে ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। যা শিক্ষক সমাজকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে।
শিক্ষক নেতারা এই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, তারা কোনোভাবেই এই ধরনের সন্ত্রাসী আচরণ মেনে নেবেন না এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষকরা যশোর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এক স্মারকলিপি প্রদান করেন। যাতে তাদের দাবিগুলো সরকারের কাছে পৌঁছানো হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রভাষক বিপ্লব কুমার কুন্ডু, প্রভাষক রওশোনারা আরা পলি, প্রভাষক ফিরোজ আহমেদ, প্রভাষক ইকবাল হোসেন, প্রভাষক মোজাফ্ফর রহমান, প্রভাষক আক্তার হোসেন বাঙ্গালী, প্রভাষক লাকি রানী কাপুড়িয়া, প্রভাষক নাজমুল ইসলাম, প্রভাষক জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।