সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ ফ্লাওয়ার মিল মালিকের অভিযোগ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
মঙ্গলবার সকালে ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাল স্বাক্ষরে গত ৩০ মাসে ১০৫৬ মেট্রিক টন গম জাল স্বাক্ষরে তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকা। কান্না জড়িত কন্ঠে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর বাজারের হাফিজ ফ্লাওয়ার মিলের মালিক হাফিজুর রহমান।
গমের কেজি প্রতি ছয় টাকা হারে ঘুষ না দেয়ায় মিলের লাইসেন্স আটকে রেখে নানাভাবে জীবননাশের হুমকি দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া নানা মিথ্যা অভিযোগ তৈরি করে আমাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র চলছে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
তিনি বলেন, আমি খাদ্য অধিদফতরের লাইসেন্সধারী একজন মিলার এবং জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আনোয়ারুল করিমের প্রতিহিংসার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী। গত ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর খাদ্য অধিদফতর থেকে লাইসেন্স গ্রহণ করি। প্রথম বছরে ঝিনাইদহ খাদ্য গুদাম থেকে ১৪ টাকা কেজি দরে প্রতি মাসে ৭হাজার ৫৮০ মেট্রিক টন গম সরবরাহ পেয়ে ডিলারের কাছে ১৬ টাকা কেজি দরে আটা পৌঁছে দিতাম।
সরকারি আইন অনুযায়ী ১০০ কেজি গমের বিপরীতে ৭৭ কেজি আটা সরবরাহের নিয়ম রয়েছে। বাকি ২৩ কেজি ভুষি, ছাল পশুখাদ্য, মাছের খাদ্য হিসেবে ৩০/৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে থাকে।
এদিকে আমি মিলার হিসেবে যথারীতি আইন মেনে মিল পরিচালনা করে আসছিলাম। কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই গত আড়াই বছর ধরে আমার মিলের নামে বরাদ্দকৃত গম না দিয়ে আমার স্বাক্ষর জাল করে মাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন বর্তমান খাদ্য কর্মকর্তা শেখ আনোয়ারুল করিম। তিনি তার অফিসের একটি সংঘবদ্ধ চক্র এবং কিছু মিলার ও ডিলারের সাথে পারস্পারিক যোগসাজসে এই লুটপাটের রাজ্য তৈরি করে কোটি কেটি টাকার মালামাল কালো বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, একটি মিল স্থাপনে প্রায় ৫ লাখ টাকার প্রয়োজন হয়। যা আমি ব্যাংক লোনের মাধ্যমে সংগ্রহ করি। মিল চালাতে প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারীদের বেতন, পরিবহন খরচ, মিস্ত্রি খরচসহ নানাবিধ ব্যয় রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৪ লাখ টাকা। তবে আমার মিলের নামে বরাদাদকৃত গম না পাওয়ায় সব হারিয়ে বর্তমানে আমি পথের ভিখারী।
তিনি বলেন, জেলায় চার জন মিলারের মধ্যে একমাত্র আমাকেই টার্গেট করে গম সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, খাদ্য কর্মাকর্তার হুমকি দেয়া অডিও রেকর্ড আমার কাছে রয়েছে। প্রয়োজনে তিনি আদালতে মামলা করবেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, যদি প্রধানমন্ত্রী সদয় হন, তাহলে আমি যে খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে আছি, তা থেকে উদ্ধার হওয়া সম্ভব। তিনি জেলা খাদ্য কর্মকর্তার উপযুক্ত শাস্তিসহ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে নিজের জীবনের নিরাপত্তার দাবি করেন।