সালমান হাসান: নিয়ম মেনে অফিস করেন না যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা। অফিস সময়েও দফতরটির কর্তাব্যক্তিদের কক্ষ থাকে তালাবদ্ধ। ফলে অন্যান্য উপজেলার দূরদূরান্ত থেকে দরকারি কাজে এসে ফিরে যান শিক্ষকরা। অন্যথায় অপেক্ষা করতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এমন দৃশ্য নতুন নয়।
গতকাল সোমবার। ঘড়ির কাঁটায় তখন পেরিয়েছে এগারটা। যশোর শিক্ষা ভবনের সামনে অপেক্ষারত শিক্ষকরা। ভবনটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তৃতীয় তলায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। ভবনের ভেতরে গিয়ে দেখা গেল অফিস চলাকালীনও সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসারের (উন্নয়ন) কক্ষ বন্ধ। দরজায় তালা ঝুলছে। ওপর তলায়ও একই অবস্থা। সেখানেও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস কক্ষেও তালা।
অভিযোগ রয়েছে, অফিসটির কর্তাব্যক্তিরা নিয়ম মেনে অফিস করেন না। ইচ্ছামাফিক ব্যক্তিগত কাজে অফিসের বাইরে সময় কাটান। আর অফিসে থাকলে খোশগল্প করে সময় পার করেন। বাকি সময় বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন তদবির নিয়ে আসা শিক্ষক নেতাদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
সোমবার সকালে অফিস চলাকালীন শিক্ষা ভবন যশোরের বাইরে বেশ কয়েকজনকে শিক্ষককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কর্মকর্তারা না থাকায় তারা অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানান। ভবনের নিচতলায় ঢুকে দেখা যায়, বাম পাশে সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার (উন্নয়ন) আনিছুর রহমানের কক্ষে তালা মারা। ওপর তলায় গিয়েও বাম পাশের প্রথম কক্ষটিও তালাবদ্ধ দেখা গেল।
নেমপ্লেট দেখে জানা গেল এই কক্ষটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল আলমের। অফিস চলাকালে তিনিও কক্ষ তালা দিয়ে বাইরে ছিলেন। তার ঠিক পাশের কক্ষটি সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের। তার কক্ষে প্রবেশ করে দেখা গেল তিনি আরেক ব্যক্তির সাথে গল্প করছেন।
আলাপচারিতায় জানা গেল, আমজাদ হোসেনের সাথে গল্পরত ব্যক্তিটি সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার (উন্নয়ন) আনিছুর রহমান। আলাপের একপর্যায়ে দাফতরিক সময়ে তার কক্ষ তালাবদ্ধ- কেন? এমনটি জানতে চাইলে বললেন, অনেক ফাইল ওয়ার্ক থাকে। এজন্য ওপর নিচ করতে হয়। কিন্তু সে সময় তাদের সামনে কোন নথিপত্র-ফাইলপত্র কিছু দেখা যায়নি।
দাফতরিক সময়ে কর্মকর্তাদের অফিস কক্ষ তালাবদ্ধ থাকে; মুঠোফোনে এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল আলম জানান, দরকারি কাজে বাইরে ছিলেন। কিন্তু এখন (দুপুর ১২ টা) ফিরে এসেছেন। তার কক্ষে গুরুত্বপূর্ণ দাফতরিক কাগজপত্র থাকে। তাই বাইরে গেলে কক্ষ তালাবদ্ধ রেখে যান। এছাড়া তিনিসহ অন্য কর্মকর্তারা স্কুল-মাদ্রাসা পরিদর্শনে যান সে সময় কক্ষ তালাবদ্ধ থাকে।