নিজস্ব প্রতিবেদক: বদলায় না হালহকিকত। ঘুরেফিরে একই আশ্বাস । বদলে যাবে যশোরের ঐতিহাসিক মুন্শি মেহেরুল্লাহ মাঠ(টাউন হল ময়দান)। তিন মাস হতে চললো এখনও শুরু হয়নি উন্নয়ন কাজ। মলিন দশা ঘোচাতে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে আরম্ভের কথা ছিলো মাঠের সংস্কারের। এক নকশার অনুমোদনে পার হয়ে গেছে তিন মাস। ফলে মাঠটির দশা এখনও বেহাল। মুক্তিযুদ্ধের স্মারক স্বাধীনতা মঞ্চটিও ভালো নেই। সব মিলিয়ে মলিন এখন যশোর ইনস্টিটিউট ও তার চারপাশ।
বসে দুদন্ড সময় কাটনোর অবস্থাও নেই মেহেরুল্লাহ ময়দানে (টাউন হল মাঠ)। সংলগ্ন ড্রেনটি পরিণত হয়েছে প্রশ্রাবখানায়। দুর্গন্ধে মাঠে দাঁড়ানোও দুষ্কর। আলমগীর সিদ্দিকী হল লাগোয়া মার্কেটটি মাঠের অবস্থা করে রেখেছে আরো বেশি শ্রীহীন। তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বদলানোর কথা ছিলো মাঠের হালহকিকত। কিন্তু জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের গড়িমসির কারণে এখনও শুরু হয়নি সংস্কার কাজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যশোর ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সংস্কারসহ উন্নয়ন কাজের নকশার অনুমোদন না মেলায় কাজ শুরু হয়নি। তবে অনেক চেষ্টা তদবিবের পর নকশার অনুমোদনসহ সংস্কার কাজের নথিপত্রে প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে গত রোববার। যার কারণে এখনও সংস্কার ও উন্নয়ন শুরুই হয়নি। অথচ স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে অনেক আগেই অর্থের বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের গড়িমসির কারণে অর্থ ও ফাইলপত্র ছাড় হয়নি। যার কারণে সবকিছু আটকে আছে। সূত্র মতে, তিন মাস আগে নকশাসহ অন্যান্য বিষয়ে অনুমোদনের জন্য জেলা পরিষদে আবেদন করা হয়।
জানা গেছে, আধুনিকয়ানের পাশাপাশি মাঠে হচ্ছে হাঁটাচলার পথ। ওয়াকিং ওয়ের পাশে বসানো হবে রঙিন ল্যাম্প। লাগানো হবে সৃদৃশ্য গাছ। আর বসার জন্য বেঞ্চ। কিন্তু এখনও সেসবের কোনটির দেখা নেই। ইনস্টিটিউট স্কুল সংলগ্ন পুকুর সংস্কার ও পাড় বাধা। চারপাশ দিয়ে হাটার রোড ও পুকুরের মাঝে সজ্জিত ফোয়ারার কোনটিরই নির্মাণ হয়নি। ইনস্টিটিউট পরিচালনা পর্ষদের অফিস রুম নির্মাণও আটকে আছে।
গতবছরের ডিসেম্বরে এসব উন্নয়ন কাজ আরম্ভের কথা ছিলো। ময়দানের উন্নয়ন ও শ্রী বৃদ্ধির কাজের বরাদ্দ অর্থ ২ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এই উন্নয়ন কাজের অর্থ সরবরাহ করবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবাহী স্বাধীনতা মঞ্চটির মূল কাঠামো অক্ষুন্ন রেখে করা হবে আধুনিকায়নেও ওই অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু কাজ এখনও শুরু না হওয়ায় এবারের স্বাধীনতা দিবসেও নতুনত্বের ছোঁয়া পাচ্ছে না ঐতিহাসিক এই মঞ্চ।
জেলার সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান হলো যশোর পাবলিক লাইব্রেরি। যশোর পৌরসভার প্রতিষ্ঠারও আগে স্থাপন হয় পাঠাগারটি। আর তার আরও অনেক পরে লাইব্রেরি ঘিরে গঠন হয় যশোর ইনস্টিটিউট। ১৮৬৪ সালে যশোর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। আর যশোর পাবলিক লাইব্রেরি ঘিরে ১৯২৮ সালে যশোর ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। আর তাই প্রাচীন এই প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে অনেক আশা-আকাক্সক্ষা যশোরের সবার-সব মহলের।
যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু জানান, জেলা পরিষদের মাধ্যমে মুন্শি মেহেরুল্লাহ ময়দান ও স্বাধীনতা মঞ্চের সংস্কার হবে। নকশাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অনুমোদনের জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে নথিপত্র দাখিল হয়েছিলো। মাস তিনেক আগে এগুলো দাখিল করা হয়। গত ১৫ দিন ধরে অনেক ছুটোছুটির পর অনুমোদন মিলেছে। এবার দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্নের মাধ্যমে সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। টাউন হল মাঠের উত্তর পাশের সংস্কার ও উন্নয়ন হবে।