ঈদে উড়াল পথে যাত্রী কম
গতবার ৯টি অতিরিক্ত ফ্লাইট থাকলেও এবার একটিও নেই
আবদুল কাদের: টিকিটের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে ঈদকে ঘিরে ঢাকা-যশোর ও যশোর-ঢাকা রুটে উড়োজাহাজের যাত্রী এবার কমেছে। যেখানে অন্যান্য বছর এয়ারলাইন্সগুলো অতিরিক্ত ফ্লাইট চালু করে। এবার কোন ফ্লাইটই বাড়েনি। তবে চলমান ফ্লাইটের ঈদের আগে পরের ৮০ শতাংশ টিকিট ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অন্যান্য বছর ঈদকে ঘিরে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো যশোর-ঢাকা রুটে অতিরিক্ত ৯টি ফ্লাইট চালু করলেও এবার কোন ফ্লাইট বাড়েনি। আগে যেখানে ভাড়া সবোর্চ্চ নেয়া হতো ৭ হাজার ৪শ’ টাকা, সেখানে আসন্ন ঈদে নেয়া হচ্ছে ১০ হাজার ৮শ’ টাকা।
এদিকে যাত্রীর হার কমে যাবার কারণে লোকসানের মুখে পড়েছেন ট্রাভেলস এজেন্সিগুলো। তারা বলছেন, আগে বড় এজেন্সিগুলো রোজার ঈদে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি করতো। সেটা এখন নেমে এসেছে ২ লাখ টাকায়।
ট্রাভেলস এজেন্সি যশোরের সাধারণ সম্পাদক ও স্কাইজেট’র স্বত্তাধিকারী অরুণ মজুমদার জানান, ফ্লাইটের টিকিটের উচ্চমূল্যের কারণে যশোর-ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে যাত্রীর হার কমে গেছে অনেক। আগে যে টিকিটের মূল্য ছিল ৩২ শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৫ হাজারের মধ্যে ছিল। কিন্তু এবারের ঈদে নেয়া হচ্ছে সর্বনি¤œ ৪ হাজার ৮শ’ থেকে ১০ হাজার ৮শ’। যেকারণে অনেকে বিমানে যাতায়াত ছেড়ে দিয়েছেন। শুধুমাত্র উচ্চবিত্তরা যাতায়াত করছেন। আর একারণে আমাদের আয় অনেক কমে গেছে। এতে যশোর-খুলনার প্রায় দেড়শ ট্রাভেলস এজেন্সি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
খুলনার ট্রাভেলস এজেন্সি ফার্স্ট এয়ারপ্লানের মালিক উজ্জল বিশ্বাস জানান, বর্তমান সময়ে বিমানে অস্বাভাবিকহারে যাত্রী কমে গেছে। এতে সংকটে পড়তে হচ্ছে আমাদের।
১৯৪৬ সালে যশোর বিমান বন্দর গড়ে তোলা হয়। প্রথমে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট দিয়ে চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে বেসরকারি ৩টি কোম্পানির ফ্লাইট রয়েছে এই বন্দরে। প্রতিদিন বাংলাদেশ বিমান ১টি, নভোএয়ারের ৩টি এবং ইউএস বাংলার ৪টি বিমান যশোর-ঢাকা রুটে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
যশোর বিমান বন্দরে রয়েছে ২টি ভিআইপি রুম। যাতে মাত্র ১২ জনের বসার ব্যবস্থা আছে। হোল্ডিং লাউঞ্জে বসার ব্যবস্থা রয়েছে প্রায় ৪০ জনের। অথচ যশোর বিমানবন্দর প্রতিদিন ব্যবহার করেন প্রায় ২ হাজার যাত্রী। তাদের আনা নেবার জন্য আসেন আরও শতাধিক মানুষ। বন্দরটি খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মানুষ ব্যবহার করায় প্রতিদিন থাকে আিইপিদের চাপ। এতে বিপাকে পড়তে হয় তাদের।
ইউএস বাংলা’র যশোরের কর্মকর্তা নাজমুল আহসান জানান, তেলের দাম বাড়ার কারণে টিকিটের দাম বেড়েছে। এবার ঈদে যশোর-ঢাকা ও ঢাকা-যশোর রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট এখনও বাড়ানো হয়নি। নভোএয়ারেরও বাড়েনি বলে জানান, রুহান নামে এক কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, সড়ক পথে যেতে কমপক্ষে ৮ ঘন্টা সময় লাগে। যে কারণে বিমানে যাত্রীর হার গত ২ বছর আগেই বেড়ে ছিল। কিন্তু করোনার কারণে মানুষের আর্থিক অবস্থা বিপর্যস্ত, আবার টিকিটের উচ্চমূল্যে যাত্রীর হার কমে গেছে।
নভোএয়ারের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মেজবাউল ইসলাম বলেন, ২৯ এপ্রিল থেকে ১ মে পর্যন্ত টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে যশোর রুটে টিকিটের চাহিদা বেশি। উচ্চবৃত্তরা বেশি টিকিট সংগ্রহ করছেন ঈদের আগে ও পরে যশোর থেকে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে চাপ রয়েছে। ঈদের পর যারা ঘুরতে যাবেন তারা আগে থেকেই কক্সবাজারের ফিরতি টিকিটও কেটে রেখেছেন।