আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের বেঙ্গালুরুতে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ স্ত্রীকে হত্যার পর সার্জন স্বামী তার প্রেমিকাকে একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন, যেখানে তিনি বলেন, ‘তোমার জন্য আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য। পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বক্তব্যও রেকর্ড করা হয়েছে। তবে তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) এনডিটিভির খবরে বলা হয়, জেনারেল সার্জন ডা. মহেন্দ্র রেড্ডি ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাপ্লিকেশনে যে মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন তাকে বার্তাটি পাঠিয়েছিলেন। তার ফোনের ফরেনসিক বিশ্লেষণ করে বার্তাটি খুঁজে পেয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২১ এপ্রিল। অভিযোগ অনুযায়ী, ডা. মহেন্দ্র রেড্ডি তার স্ত্রী ডা. কৃতিকা রেড্ডিকে তাদের বাড়িতে অতিমাত্রায় চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে হত্যা করেন। এরপর তিনি স্ত্রীকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যান, সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (এফএসএল) প্রতিবেদনে মৃত কৃতিকার শরীরে প্রপোফল নামের এক শক্তিশালী চেতনানাশক ওষুধের উপস্থিতি পাওয়া যায়, যা একটি গুরুতর অপরাধমূলক কাজের ইঙ্গিত দেয়। তদন্তকারীরা ঘটনাস্থল থেকে একটি ক্যানুলা সেট এবং একটি ইনজেকশন টিউবসহ বিভিন্ন চিকিৎসা-সংক্রান্ত সরঞ্জাম উদ্ধার করেন।
এসকল তথ্যের ভিত্তিতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কৃতিকার বাবা। তিনি উল্লেখ করেন, তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তার জামাতা মহেন্দ্র রেড্ডি। এর প্রেক্ষিতে ঘটনার ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পর গত ১৫ অক্টোবর পুলিশ মহেন্দ্র রেড্ডিকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের ধারণা, তিনি তার চিকিৎসা-জ্ঞান ব্যবহার করে স্ত্রীর মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছিলেন।
বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার সীমান্ত কুমার সিং বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সংগৃহীত প্রমাণে স্পষ্ট, স্বামীই এই অপরাধের মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি নিজেই স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সন্দেহ জাগাতে পারে এমন কিছু তিনি চিকিৎসকদের জানাননি। পরে আমরা জানতে পারি তার স্ত্রীকে কিছু ঘুমের ওষুধ ও ইনজেকশন দেয়া হয়েছিল যা খারাপ কিছুর ইঙ্গিত বহন করে।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ২৬ মে মহেন্দ্র ও কৃতিকার বিয়ে হয়েছিল। দুজনেই বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
