শাহারুল ইসলাম ফারদিন: নিত্যদ্রব্যের বাজার কারসাজির সাথে যেন পাল্লা দিয়েছেন দেশি ফল ব্যবসায়ীরা। তারাও রমজানকে ঘিরে সিন্ডিকেট করে কয়েক গুণ দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিশেষ করে পাকা কলা, কাগুজে লেবু, তরমুজ, সফেদা, বেল, পাকা পেঁপে ও পেয়ারার দাম হঠাৎ করেই বৃদ্ধি হয়েছে। চাহিদার সাথে সরবরাহ যদি কম থাকে, তাহলে অর্থনীতির সঙ্গায় দাম বৃদ্ধি হতে পারে। অথচ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহের কমতি নেই। ভোক্তা চাইলেই পণ্য পাচ্ছেন।
অধিকাংশ মুসলিম রোজা শেষে ইফতারে ফলের শরবত ও নানা রকম ফলমূল খেয়ে থাকেন। এ কারণে প্রতিবছর দেশি ফলের চাহিদা থাকে রমজানে। এ সময় দাম একটু বাড়ে। কিন্তু এবার লাগাম ছাড়া হয়েছে কিছু ফলমূলের দাম। সবমিলিয়ে দেশি ফলের বাজারে ভোক্তাদের বোবা কান্না চলছে।
বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, যে কলার ছড়া রোজার ৩-৪ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা, সেই কলা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। ৫ টাকা পিসের অমৃত সাগর (ঠটে) কলা এখন বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ টাকা। তিন টাকার (প্রতি পিস) কাগুজে লেবু ৮-৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তরমুজের অবস্থাও একই। কোথাও কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, আবার কোথাও পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখানে শুভঙ্কের ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। পিসে তরমুজ বিক্রিতে আগে থেকে ওজন দিয়ে দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে।
যশোর শহরের ঘোপের বাসিন্দা বেসরকারি সংস্থার স্বল্প বেতনের কর্মী আনিসুর রহমান বলেন, আগে গরিবের ফল ছিল তরমুজ। কিন্তু এখন আর তা নেই। দাম যা, তাতে গায়ে হাত দেয়ার মতো নেই। জেলখানার পাশে তরমুজ পিসে বিক্রি হলেও কেজিতে আগে থেকে মেপে রাখা হয়। ১৭০ টাকার নিচে কোনো তরমুজ নেই। ৩০০ টাকাও দাম আছে। তাহলে কি তরমুজ গরিবের ফল আছে?
বেজপাড়ার শেয়ার মার্কেটের যশোরের এক ব্রোকার হাউসে কর্মরত হাফিজুর রহমান বলেন, দেশ কি এখন মগের মুল্লুক? যে কলার পিস ৪-৫ টাকা ছিল সেই কলা এখন ১০-১১ টাকা। আমাদের কিছুই কি বলার নেই। না কি বাজারে গিয়ে আমাদের শুধু বোবা কান্না করতে হবে?
একইভাবে দাম বেড়েছে কাগুজে লেবু। ৩ টাকার প্রতি পিসের লেবু বিক্রি হচ্ছে ৭-৮ টাকা। আর বড় সাইজের লেবু ১২ টাকা করেও বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ৩০-৪০ টাকার পাকা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। আর বড় সাইজের পেঁপে ১০০ টাকার ওপরে। আর কারণ ছাড়াই বেল, সফেদা ও পেয়ারার দামও হঠাৎ করে বেড়ে গেছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। আড়ৎদাররা দাম বাড়িয়েছে।
এমএম আলী (মাইকপট্টি) রোডের পাশে পেয়ারা বিক্রেতা হাসান বলেন, চৌগাছা থেকে পেয়ারা কিনে আনি। চাষিরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, তাই রমজানে কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়েছে।