নিজস্ব প্রতিবেদক
ধান বাঁচাতে গিয়ে যশোরে দুইজন, সাতক্ষীরায় একজন ও ঝিনাইদহে নিহত হয়েছেন আরো একজন। যশোরে দুই কৃষকের মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে শার্শা উপজেলার কায়বা গ্রামের মাঠে আজিজুল ইসলাম (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আর বুধবার রাতে চৌগাছা পৌর এলাকার তারিনিবাস গ্রামের দুয়ালের মাঠে ক্ষেতে ধান জালি দেয়ার সময় বজ্রাঘাতে সাগর কুমার বিশ্বাস (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
বেনাপোল ও বাগআঁচড়া প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা গ্রামের মাঠ থেকে ধান তোলার সময় বজ্রপাতে আজিজুল ইসলাম নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, বৃষ্টিতে যেন ধান নষ্ট না হয় সেজন্য বিকেলে আজিজুল ও তার ভাইসহ ৩-৪ জন স্থানীয় ঠ্যাংগামারী বিল মাঠে নিজেদের জমির ধান গোছাতে যান। তারা মাঠে ধান গোছানো অবস্থায় বজ্রপাত হয়। এতে আজিজুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পাশে থাকা তার ভাই দেখে চিৎকার দেন। তখন স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করে দ্রুত বাগআঁচড়ার জোহরা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে আজিজুলকে মৃত ঘোষণা করেন। জোহরা ক্লিনিকের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ক্লিনিকে নিয়ে আসার আগেই আজিজুলের মৃত্যু হয়েছে।
চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি জানান, চৌগাছায় মাঠে ধান ক্ষেতে ধান জালি দেয়ার সময় বজ্রাপাতে সাগর কুমার বিশ্বাস (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত সাগর কুমার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হালদার পাড়ার বাসিন্দা। বুধবার রাতে পৌর এলাকার তারিনিবাস গ্রামের দুয়ালের মাঠে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
পৌর কাউন্সিলর রুহুল আমিন বলেন, বুধবার রাত নয়টার দিকে সাগর তার বাবাসহ ৪ জন কপোতাক্ষ নদ পার হয়ে তারিনিবাস দুয়ালের মাঠে নিজেদের জমির ধান যেন বৃষ্টিতে না ভেজে সে জন্য পলিথিন দিয়ে ঢাকছিলেন। এ অবস্থায় রাত নয়টা ১৫ মিনিটের দিকে বজ্রপাতে সাগরের শরীরের বাম পাশ ঝলসে যায়। এবং তার সঙ্গী মৃত্যুঞ্জয় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। পাশে থেকে তার বাবা ও ভাই দেখে দৌড়ে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তাদের ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা সরকারি মডেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সাগরকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ইমরান হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি জানান, বজ্রাঘাতে নিহতের শরীরের বামপাশ ঝলসে গেছে।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সবুজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সাতক্ষীরায় প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে ঝড় বৃষ্টির পর আকস্মিক বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া ব্যক্তি হলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা গ্রামের বিহারীনগর গ্রামের মৃত অহেদ মিস্ত্রির ছেলে আব্দুল্লাহ মিস্ত্রি (৫০)।
স্থানীয়রা জানান, আব্দুল্লাহ মোল্যা বিকালে নিজের জমিতে ধানের জালি (বিছলি বাধা) দিচ্ছিল এসময় আকস্মিক বজ্রপাতে তিনি মারা যান।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান জানান, বজ্রপাতে মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। যেহেতু বজ্রপাতের ঘটনায় কোন মামলা হয় না সে কারণে নিহতের
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহে ধানের ক্ষেতে কাজ করতে যেয়ে বজ্রপাতের ঘটনায় সুজন নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের কুবির খালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানের জমিতে কাজ করার সময় বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে বজ্রপাতে তার মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। নিহত সুজন সদর উপজেলার ২নং মধুহাটি ইউনিয়নের কুবির খালী গ্রামের বাসিন্দা।
মৃত্যুর বিষয়টি মধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন নিশ্চিত করেছেন।