দেশের বিভিন্ন স্থানে বেআইনীভাবে ভূগর্ভস্থ বালু তুলে রমরমা ব্যবসা চলছে। এ নিয়ে জনগণ প্রতিবাদ করছে, কিন্তু সংশ্লিষ্টরা পাত্তা দিচ্ছে না। উল্টো হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে হয়রানিও করছে। আবার প্রশাসন কিছু বললেও থোড়াই কেয়ার করছে। বেআইনী কাজ করেও দাপট দেখানোর শক্তি কোথায় পাচ্ছে তারা এটা ভাববার বিষয়। যেখান সেখান থেকে বালু উত্তোলন করা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। এতে ভূমিধসের সৃষ্টি হয়ে লোকালয়সহ ব্যাপক এলাকার অপরিসীম ক্ষতি হতে পারে। এজন্য কোথাও এ বেআইনী কাজটি হলে প্রশাসনের দায়িত্ব হলো সেটা ঠেকানো। এ জন্য প্রশাসনের যা প্রয়োজন তাই করবে। যশোরের ক্ষেত্রে প্রশাসন এ ব্যাপারে উদাসিন বলে মনে হচ্ছে। প্রশ্ন হলো বালু উত্তোলনকারীদের ঠেকানো যাচ্ছে না কেন?
আমরা মনে করি এমন সব ঘটনার নায়করা হয় রাজনৈতিক বা প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থাকে। প্রশাসন তাদের সমর্থন না দিলেও প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে অপরাধ করে যাচ্ছে। খোদ যশোর শহরে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। জনউদ্যোগ ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা তুলে ধরেছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শহরের কাজীপাড়া আজিজ সড়কের তেঁতুলতলায় কালভার্টের কাছে ভৈরব নদ থেকে। এই বালু তুলে পুলিশ লাইনের মধ্যবর্তী স্থানে এক পুকুর ভরাট করছে। বালু তোলা যেমন পরিবেশ বিরুদ্ধ কাজ তেমনি পুকুর ভরাট করা পরিবেশ বিরোধী কাজ। এটি দন্ডনীয় অপরাধ। একসাথে দুটি অপরাধ হচ্ছে, কিন্তু প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের কোন নড়াচড়া নেই। কারণ তারাই এই বৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত। জনউদ্যোগ দাবি করেছে যারা বালু উত্তোলনের সাথে জড়ি তাদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনা হোক।
বালু অধিক গভীর থেকে উত্তোলন করলে আশপাশের অনেক দূর এলাকা ব্যাপক ভূমিধসের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে শত বছর লেগে যাবে। আর পুকুর ভরাট করলে পাতালে পানি সংকট সৃষ্টি হয়ে দেশ মরুয়ানের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাবে। জলবায়ু ও পরিবেশের ঘটবে দারুণ বিপর্যয়। একে যশোর শহর শহরসহ গোটা জেলায় প্রবাহমাণ নদ-নদী নেই বললে চলে। এ অবস্থায় পুকুরই হচ্ছে পরিবেশ রক্ষার শেষ ভরসা। বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করেই পুকুর ভরাট বেআইানী করা হয়েছে। কিন্তু এই আইনের বাস্তবায়ন যারা করবে তারাই এই কাজটি করছে। কিন্তু কে এর প্রতিবাদ করবে। বেড়ায় যদি ক্ষেত খায় তাহলে ক্ষেত রক্ষা করা যাবে না কোনমতে। কারো সাথে আমাদের বৈরিতা বা বিরোধীতা নেই। শুধু দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে এই কাজের সাথে যারা জড়িত তাদের প্রতিহত করার আহবান জানাই।