শেখ সেকেন্দার আলী, কপিলমুনি
খুলনার পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অভিভাকরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই কোন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ফলে হাসপাতালগুলোতে মিলছে না সু-চিকিৎসা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের দারিদ্র অভিভাবকদের জেলা শহরে এসে সন্তানের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। অধিকাংশই খরচের ভয়ে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারে রোগ হচ্ছে জটিল। এমনকি সুচিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে অনেকেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় শিশু রোগী বাড়ায় সমস্যা প্রকট হচ্ছে। প্রতিদিন রোগীর চাপ বাড়ছে। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে বেশির ভাগ শিশু। পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ফাঁকা রয়েছে শিশু কনসালটেন্ট পদ। ফলে উপজেলার মেডিকেল অফিসাররা দায়ছাড়া চিকিৎসা দিচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন অভিভাবক জানান, পাইকগাছা থেকে খুলনার দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। আমরা চাইলেও যেতে পারি না। পাইকগাছা সোনালী ব্যাংকের সেকেন্ড ম্যানেজার বাবু বলেন, দীর্ঘ একমাস যাবত আমায় সন্তান সর্দি-কাশিতে অসুস্থ রয়েছে। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থা। আমার সন্তানকে এক সপ্তাহ ধরে খুলনায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকলে আমরা এই বিড়ম্বনায় পড়তাম না। তিনি সরকারের কাছে আবেদন করে বলেন, পাইকগাছা হাসপাতালে দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেওয়ার জন্য।
পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নীতিশ চন্দ্র গোলদার বলেন, পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন শুন্য রয়েছে শিশু কনসালটেন্ট পদ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় মেডিকেল অফিসার দিয়ে শিশুদের চিকিৎসা প্রদান করেন। সমস্যা জটিল হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে রেফার করা হয়।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকলে শিশুদের রেফার কমে যাবে। শিশু মৃত্যু রোধে কার্যকারী পদক্ষেপ হবে। হার্ড টু রিচ পাইকগাছায় শিশু ডাক্তার থাকলে ভোগান্তী অনেকটা কমে আসবে। এসব এলাকা থেকে শিশু রেফার্ডে অভিভাবকদের খুবই ভোগান্তি পেতে হয়। বিশেষ করে কয়রা সবচেয়ে দূরবর্তী উপজেলা, সেখানে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক একান্ত প্রয়োজন। শুন্য পদের তালিকা পাঠানো রয়েছে।
আশা করছি দ্রুতই এটির সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডা জনিত রোগের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রসহ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক-নার্স রয়েছে। ঠান্ডা জনিত রোগী নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ বলেন,
পাইকগাছাসহ আরো সাতটি উপজেলাতেই শিশু কনসালটেন্ট জরুরি। তবে সরাসরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কনসালটেন্ট পদে পদায়ন দেয়া হয়। শুণ্য পদের তালিকা আমরা বহুবার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। হয়তবা কনসালটেন্ট কম থাকায় পদায়ন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।