অভয়নগর প্রতিনিধি
দিশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা পরিচালিত উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের মেয়াদ শেষে সমুদয় অর্থ ছাড় হলেও নিয়োগকৃত শিক্ষকদের ছয় মাসের বেতন দেওয়া হয়নি। একই সাথে সরকার নির্ধারিত হারে উপবৃত্তি ও ঘর ভাড়াও দেওয়া হয়নি। এ অবস্থা যশোরের অভয়নগর উপজেলায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ৭০টি শিখন কেন্দ্র রয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে একজন করে শিক্ষক দিনে তিন ঘণ্টা পাঠদান করেন। প্রত্যেক শিক্ষককে মাসিক ৫ হাজার টাকা হারে বেতন দেওয়া হয়। চলতি মাস ধরে শিক্ষকদের ১৮ মাসের বেতন পাওনা হয়। কিন্তু তাদের বেতন দেওয়া হয়েছে ১২ মাসের। এছাড়া শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা এখনো দেওয়া হয়নি। শিখন কেন্দ্র ভাড়া ভ্যাট বাদে ১২শ টাকা নির্ধারিত। কিন্তু কেন্দ্র ভাড়া দেওয়ার হয়েছে ৫শ থেকে ৭শ টাকা।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক কয়েকজন কেন্দ্র শিক্ষক বলেন, আমরা ১২ মাসের বেতন পেয়েছি। ঘর ভাড়া দেওয়া হয়েছে ৫শ থেকে ৭শ টাকা। এছাড়া শিক্ষার্থীরা কোন উপবৃত্তি পায়নি।
সংস্থার অভয়নগর উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপক সঞ্জয় বিশ^াস বলেন, আমরা শিক্ষকদের ১৫ মাসের বেতন দিয়েছি। উপবৃত্তির টাকা এখনো দেওয়া হয়নি। কেন্দ্র ভাড়া স্থান ভেদে ৭শ থেকে বিভিন্ন হারে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যপারে দিশা সমাজ কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাহিমা খাতুন বলেন, ‘আমি সব কিছু নিয়ম মাফিক করেছি। এর বাইরে আপনাকে কোন তথ্য দেবো না।’
অভয়নগর উপজেলা ইনডিপেনডেন্ট ভেরিফিকেশন এজেন্সি (আইভিএ) এর সদস্য সচিব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইউএনও স্যার আমাকে তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করতে বলেছিলেন। সেই মোতাবেক আমি তদন্ত করে রির্পোর্ট দিয়েছি। এর বাইরে আপনকে কিছু বলবোনা। আপনি ইউএনও স্যারের কাছ থেকে জেনে নিন।’
প্রসঙ্গত, দেশের ঝরে পড়া শিশু কিশোরদের শিক্ষার আওতায় আনতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতর উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো’র আওতায় সেকেন্ড চান্স এডুকেশন (সাব-কম্পোনেন্ট ২.৫’ আউট অব স্কুল চিল্ড্রেন-(ওওএসসি) প্রোগ্রাম, পিইডিপি-৪) কর্মসূচি গ্রহণ করেন। কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেক জেলা থেকে একটি লিড এনজিও নির্বাচন করা হয়। মন্ত্রণালয় নির্ধারিত এনজিও এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। এনজিওগুলোর আবেদনের প্রেক্ষিতে যশোরে কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ২০১৯ সালে ৭টি এনজিওকে প্রাথমিকভাবে তালিকায় রাখা হয়। সাতটির মধ্যে সর্বনি¤œ অবস্থানে ছিল দিশা সমাজ কল্যাণ সংস্থার নাম। তবুও কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় তারা। যশোর জেলার জন্য ২০২০ সালে স্থানীয় দিশা সমাজ কল্যাণ সংস্থার সাথে চুক্তি হয়। কিন্তু করোনা মহামারির কারনে তা স্থগিত করা হয়। পরে ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর এক পরিপত্রের মাধ্যমে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে শিখন কার্যক্রম চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যক্রম চালু করা হয়। যা চলতি মাসের ৩০ জুন সালে শেষ হবে।
ওই চিঠিতে বিভিন্ন নির্দেশনার পাশাপাশি বলা হয়েছে, ইনডিপেনডেন্ট ভেরিফিকেশন এজেন্সি (আইভিএ) কর্তৃক শিক্ষার্থীর যথার্থতা, শিক্ষক, সিএমসি সদস্য, শিখন কেন্দ্র ও শিক্ষা উপকরণ যাচাই করা হবে। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক মূল্যায়ন কমিটির মাধ্যমে মূল্যায়ন ও যাচাই করে তা দাখিলের পর অর্থ ছাড় হবে।