দেলোয়ার কবীর
যশোর অঞ্চলের ছয় জেলায় চলতি খরিপ মৌসুমে ১ লাখ ৭০ হাজার ১২৪ হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এতে হেক্টরপ্রতি ১২ দশমিক ৬৮৭ বেল হিসেবে ২০ লাখ ৫৮ হাজার ৪শ ১৬ বেল পাট উৎপাদন হওয়ার কথ। তবে প্রচণ্ড তাপদাহে চাষিদের পাটচাষে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে পাটের আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। কিন্তু কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, মে মাসের শেষ নাগাদ পাটবোনা শেষ হলে আরও কিছু জমিতে পাটের আবাদ হবে। বোরোচাষে প্রণোদনা, কম পানিতে সেচদান ও ভূট্টার প্রতি ঝুঁকে পড়ায় পাটের আবাদ কিছুটা কমবে বলেও তারা মতপ্রকাশ করেছেন।
ঝিনাইদহের কালিচরণপুরে কথা হয় পাটচাষি মনিরউদ্দিনের সাথে। তিনি জানালেন, গতবার তার দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করে ২৩ মণের মত ফলন পান। কিন্তু বপন মৌসুমের শুরু থেকে এপর্যন্ত বৃষ্টিপাতের দেখা মেলেনি তার মত সব চাষির। ফলে অনেকেই এবার পাটের আবাদ কমিয়ে দিয়েছেন। আবাদ ভালো হলেও বীজ, সার, সেচ, দিনমজুর ও কীটনাশকের উচ্চমূল্যের কারণে পাটচাষ এখন মোটেও লাভজনক নয় বলে মন্তব্য চাষিদের। তাদের মতে, বিঘাপ্রতি ১২-১৩ মণ পাটের ফলনে ২৪-২৫ হাজার টাকা হলেও হলের তাদের কমপক্ষে ২০ হাজার টাকার মত খরচ হয়ে যায়। পাটকাঠি বা পাটশলা বিক্রি করে কিছু টাকা পাওয়া গেলেও সেটা চাষিদের জন্য লাভজনক হচ্ছে না। বিধায় তারা পাটচাষে অনুৎসাহিত হচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অফিস সূত্রমতে, চলতি খরিপ-১ পাটচাষ মৌসুমে যশোরে ২৫,২০০ হেক্টরে, ঝিনাইদহে ২৩,৭০০ হেক্টরে, মাগুরায় ৩৬,৯৫০ হেক্টরে, কুষ্টিয়ায় ৪১,৭০০ হেক্টরে, চুয়াডাঙ্গায় ২০,৮৪০ হেক্টরে এবং মেহেরপুরে ২১,৭৩৪ হেক্টরে পাটচাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ১২ দশমিক ৬৮৭ বেল হিসেবে ২০ লাখ ৫৮ হাজার ৪শ ১৬ বেল পাট উৎপাদন হবে। সূত্রমতে, গতমৌসুমে ১৬৯,৩৮২ হেক্টর জমিতে হেক্টরপ্রতি ১৪ দশমিক ৩৭৬ বেল হিসেবে ২৪ লাখ ৩৫ হাজার ১শ ৭৬ বেল পাট উৎপাদন হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আবু হোসেন জানান, পাটের আবাদে সেচ ও দিনমজুরের খরচসহ অন্যান্য খরচ বেশি হওয়ায় এবং আউসে প্রনোদনা দেওয়ায় চাষিরা আউসচাষে ঝুঁকছে। বোরো আবাদে সেচখরচ বেশি হবার কারণে তা বেশি লাভজনক না হওয়ায় সেচের খরচ, বিশেষ করে ভূগর্ভস্ত পানির ব্যবহার কমাতে সরকার আউসে প্রণোদনা দিচ্ছে। শুধুমাত্র কুষ্টিয়া জেলাতেই এবার পাঁচ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আউসের আবাদ হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, আর্থিক লাভের কারণে চাষিরা ভূট্টার আবাদও বাড়িয়ে দিচ্ছেন বিধায় পাটের জমি ক্রমাগত কমছে। তবে দেশের চাহিদা পূরণ এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পাটের আবাদ যাতে উল্লেখযোগ্য না কমে সেজন্য তারা পাটচাষিদের উৎসাহিত করছেন।
সর্বশেষ
- মুক্তেশ্বরী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের মাসিক সাহিত্য সভা অনুষ্ঠিত
- চলন্ত ট্রেনে সন্তান প্রসব, সুস্থ আছে মা ও নবজাতক
- বেনাপোলের বাসিন্দা আ. লীগ নেতা কামরুজ্জামান বাবলু ঢাকায় আটক
- জীবিকা সংগ্রামে রাস্তায় লেবু বিক্রি করা সেই শিক্ষকের পাশে এক্স গ্রামীণ ফোন যশোর টিম
- কমছে না সবজির দাম, বেশিরভাগ সবজিই ৮০ টাকার উপরে
- যশোরে কনস্টেবল পদে মেধার ভিত্তিতে ৩৮ জন নিয়োগ
- সপ্তাহে একটি বই পড়ি আয়োজিত পাঠচক্রে ক্যারিয়ার দিকনির্দেশনা বিষয়ক আলোচনা
- রুটি চুরি করে খাওয়ায় মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার পিতার!