নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতারক চক্রের খপ্পড়ে পড়ে নগদ টাকা ও সোনার অলঙ্কার খুইয়েছেন তানিয়া তানজিম সুমি নামে এক স্কুল শিক্ষিকা। তিনি যশোরের কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল গ্রামের এলিন সাঈদ-উর-রহমানের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি যশোর শহরের বেজপাড়া চিরুনিকল এলাকার বসবাস করেন।
রোববার কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন প্রতারিত ওই নারী। মামলায় একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামি হলেন, পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার গোনাইগাছি গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা ওরফে সাকিব খাঁন (৩৯)।
মামলায় তানিয়া তানজিম সুমি উল্লেখ করেছেন, তিনি কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। গত ১০ জুন মোবাইল ফোনের স্টার মেকার অ্যাপের সাকিব নামে আইডিধারী এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয়। ওই ব্যক্তি নিজেকে সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন এবং তার বাড়ি রাজশাহী বলে পরিচয় দেন। এরপর সাকিবের ফেসবুক আইডিতে গিয়ে তার সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে তোলেন সুমি। পরে হোটসআপের মাধ্যমে দুই জনে নিয়মিত কথা বলতেন, চ্যাট করতেন। এক পর্যায়ে সাকিব তাকে সেনাবাহিনীর প্রভাব খাটিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকরির চেয়ে মর্যাদাপূর্ণ চাকরি পাইয়ে দিবেন বলে তাকে প্রলোভন দেখান। এ জন্য সুমির কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করেন সাকিব নামে ওই ব্যক্তি। পরবর্তীতে সাকিবের দুলাভাই ও বন্ধু সেজে আরও দুই ব্যক্তি তাদের ফেসবুক আইডি থেকে সুমিকে ফোন করেন এবং নিজেদের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দেন। তারাও সাকিবের বিষয়ে তাকে আশ্বস্ত করেন। ফলে সকলের কথা বিশ্বাস করে সাকিবের দেওয়া নগদ অ্যাকাউন্ট নম্বরে (০১৩০১-৭০১৫৮৪) গত ২২ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত মোট ৫ দফায় ২ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন সুমি। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মোতাবেক চাকরি পাইয়ে না দেওয়ায় সাকিবের কাছে টাকা ফেরত চান সুমি। তালবাহনার এক পর্যায়ে গত ৭ জুলাই সুমিকে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন সাকিব। এ জন্য সুমিকে যশোরের চাঁচড়া চেকপোস্টে দেখা করতে বলেন সাকিব। এ কারণে গত ৭ জুন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চাঁচড়া চেকপোস্টে এসে সাকিবের সাথে দেখা করেন সুমি। পরে তারা চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকার মধুমতি হোটেলে বসে এক সাথে জুস পান করেন। জুস পানকালে সুমির সামনে একটি কাগজ এগিয়ে ধরে তাকে পড়তে বলেন সাকিব। কিন্তু কাগজ পড়ার সময় সম্মোহিত হয়ে পড়েন সুমি। এ সময় সাকিবের কথামত শরীরে থাকা সোনার চেইন, আংটি, কানের দুল খুলে তার হাতে তুলে দেন সুমি। যার মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা। এরই মধ্যে সাকিব সেখান থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর নিজের মধ্যে চেতনা ফিরে পেলে সুমি বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এরপর রোববার সকালে পিবিআই কার্যালয়ে গিয়ে সবকিছু খুলে বলেন সুমি। পরে পিবিআইয়ের মাধ্যমে প্রতারক সাকিবের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে থানায় মামলা করেন তিনি।
