কল্যাণ ডেস্ক
দুর্ঘটনা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয় না অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এসব বাসের মালিক পুলিশ, রাজনীতিক ও শক্তিশালী মানুষেরা। তাই কোনো বাসের কিছু হয় না।’
সোমবার জাতীয় সংসদের অনির্ধারিত আলোচনায় ফিরোজ রশীদ এসব কথা বলেন। এর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্য কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় এত মানুষ মারা যায় কী না জানি না। একটি মৃত্যুর ঘটনায় ওই পরিবারটি ধ্বংস হয়ে যায়। তাদের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা বিলীন হয়ে যায়।’
সড়কে চলাচলকারী বাসের মালিক কারা প্রশ্ন তুলে জাপার সংসদ সদস্য বলেন, ‘রাস্তায় চলাচল এই বাসগুলোর মালিক কারা? অধিকাংশ বাসের মালিক হচ্ছে পুলিশ অফিসার। যারা রাজনীতি করেন তারা। আর যারা শক্তিশালী আমাদের পাশে বসে আছেন। আমার পেছনে বসে আছেন আমাদের দলের চিফ হুইপ। তিনি বলতে পারবেন এসব বাসের মালিক কারা।’
সড়কে অব্যবস্থাপনা তুলে ধরে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া এইসব কিচ্ছু হয় না। বেপরোয়া বাস চলে। কোনো বাসের লাইসেন্স নেই। চালকের লাইসেন্স নেই। সিগন্যাল বাতি নেই। ডানে যাবে না বামে যাবে কেউ বলতে পারে না। এসব চালকদের আজ পর্যন্ত আমরা পথে আনতে পারলাম না। শিক্ষিত করতে পারলাম না।’
বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করে ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘দেশ অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ করব। কিন্তু এই যে অবস্থা! এ দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ করব? আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে যদি একটু তুলনা করি সেখানে কী এই অবস্থা আছে? সিঙ্গাপুরে আছে, মালয়েশিয়ায় আছে।’
রাস্তার তুলনায় মহাসড়কে অধিক ওজনের গাড়ি প্রবেশ করে জানিয়ে সংসদ সদস্য বলেন, ‘সরকার রাস্তাঘাটের অনেক উন্নয়ন করেছে। এসব রাস্তা দিয়ে রাতের বেলা ২০ টন/৩০ টনের ট্রাক চলে। দেখার কেউ নেই। টাকা খেয়ে এই ট্রাকগুলোকে রাস্তায় ঢুকতে দেয়া হয়। বাস ও চালকের লাইসেন্স আছে কি না, গাড়ির ফিটনেস আছে কি না, এসব যাচাই করলে এসব ঘটনা ঘটত না। মহাসড়কে কোথাও মোটরসাইকেল-ভটভটি চলে না। আমাদের দেশে চলছে। এসব ভটভটি-নছিমন করিমনের কোন ব্রেক নেই।’
অনির্ধারিত আলোচনায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘কক্সবাজার, টেকনাফ এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা করা হয়েছিল। এরপর অনেকে আত্মসমর্পন করেছিলেন। কিন্তু এখন মাদক ব্যবসা তিনগুণ বেড়েছে। এর সঙ্গে রোহিঙ্গারা জড়িত। অনেক জায়গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের বেড়া কেটে বাইরে চলে যান। তমব্রু সীমান্তে কোনাপাড়া এলাকাটি নোম্যান্স ল্যান্ড। সেখনে কিছু রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে সশস্ত্র গ্রুপ আছে। তারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কোনাপাড়া দিয়ে মাদক আসছে। এই মাদক ব্যবসার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এদেশের অনেকে জড়িত। কক্সবাজার, টেকনাফে কারা কারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তার নতুন তালিকা করা উচিত। আর কোনা পাড়ায় যারা অবস্থান করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না গেলে অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে।’