নিজস্ব প্রতিবেদক
বিয়ের সাড়ে পাঁচ মাস পর যৌতুক দাবিতে মারপিট, অসংলগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া এবং সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগে যশোরে স্বামী ও ভাসুরের বিরুদ্ধে পর্ণগ্রাফি আইনে আদালতে মামলা করেছেন সাদিয়া খাতুন নামে এক গৃহবধূ। গত ২৫ জুলাই বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিশেষ পুলিশ সুপার সিআইডি পুলিশ যশোরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলো, যশোর শহরের শরীফ উদ্দিন ঝন্টুর দুই ছেলে সাইফুল ইসলাম শৈশব ও শফিকুল ইসলাম শুভ। বাদী সাদিয়া খাতুন মণিরামপুর উপজেলার তাহেরপুর গ্রামের মীর সাদেক আলীর মেয়ে।
বাদী মামলায় বলেছেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে আসামি সাইফুল ইসলাম শৈশবের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় জামাইকে স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল প্রদান করেন বাদীর পিতা। কিন্তু সপ্তাহখানেক পার হতেই অপর আসামি শফিকুল ইসলামের ইন্দনে ব্যবসা করার কথা বলে বাদীর কাছে চার লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন সাইফুল ইসলাম।
যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করিলে শফিকুল ইসলামের প্রকাশ্যে ইন্দনে বাদীর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে সাইফুল ইসলাম। এই ঘটনাটি বাদীর পিতাকে জানানোর পরে তারা জামাই সাইফুল ইসলামকে যৌতুক ছাড়া সাদিয়া খাতুনকে নিয়ে সংসার করার জন্য অনুরোধ করেন। এরপর গত ১০ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাংসারিক কাজকর্ম করাকালে আসামি শফিকুল ইসলামের ইন্দনে বাদীকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে তার স্বামী সাইফুল ইসলাম। মারপিটে এক পর্যায় বাদীর পরনের পোষাক বিবস্ত্র হয়ে গেলে আসামি শফিকুল ইসলাম তার মোবাইল ফোনে ভিডিও এবং স্থিরচিত্র ধারণ করেন। এরপর তাকে ঘরে আটকে রেখে হত্যার ভয় দেখিয়ে ৬টি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এসময় বাদীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে মারপিটের হাত থেকে রক্ষা করে। খবর পেয়ে পরদিন ১১ জুন বাদীর মাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসা শেষে বাদী এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন সাদিয়া খাতুন। ওই মামলাটি প্রত্যাহার করা না হলে আসামিদের ধারণ করা বিবস্ত্রেও ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশ করাসহ স্বাক্ষর করা সাদা স্ট্যাম্পে মনগড়া কথা লিখে বাদীর ক্ষতি করার হুমকি প্রদান করে।
