এম আর মাসুদ, ঝিকরগাছা
যশোরের ঝিকরগাছায় এ বছর গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাজারে গমের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ কৃষকরা। মণপ্রতি গমের দামের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় বড় ধরনের লোকসানের মুখোমুখি হয়েছেন তারা। ফলে আগামীতে গমের আবাদ কমে যাওয়ার শঙ্কা চাষিদের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। তারমধ্যে বারি গম ৩০, ৩৩, বি-ডবলুএমআরআই-৩ জাতের চাষ বেশি হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালে ব্লাস্টের কারণে গম চাষ নিষিদ্ধের পূর্বে এ উপজেলাতে ৩৫০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ করা হতো। গত দুই তিন মৌসুমে আবার কৃষকেরা এ আবাদে ফিরেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ মাঠে গম কাটা হয়ে গেছে। অনেকে কেটে ঝেড়ে গম বিক্রিও করেছেন। রোজার মাস চলায় ও ঈদ ঘনিয়ে আসায় কেনাকাটার প্রয়োজনে লোকসানেই গম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে অনেক কৃষক। বর্তমান যে বাজার দর তাতে গত বছরের তুলনায় অনেক কম দামে গম বিক্রি করে চাষিরা লোকসান গুনছেন। কথা হয় উপজেলার বল্লা গ্রামের ইজহারুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছিলাম। খেতে চাষ দেওয়া, বীজ বপণ, সেচ দেওয়া, সার প্রয়োগ, কীটনাশক দেওয়া, কাটা-বাঁধা, ঝাড়াসহ সাড়ে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। সাড়ে ১১ মণ গম পেয়েছি। ১৩ শ টাকা করে মণ বিক্রি করেছি। তাতে যে টাকা হয়েছে, নিজের জমি তাই পিট বেঁচেছে। অথচ গেলবারও ২ হাজার টাকা মণ পেয়েছিলাম’।
বোধখানা গ্রামের বেলেমাঠপাড়ার হারুন অর রশিদ জানান, ২১ শতক জমিতে ১৩ মণ গম পেয়েছি। যা পূর্ব কখনও হয়নি। কিন্ত দাম কম থাকায় বিক্রি করেননি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘এ বছর তিনটি কারণে গমের ফলন ভালো হয়েছে। যার মধ্যে প্রধানত এ মৌসুমে মধ্য জানুয়ারিতে যে বৃষ্টিপাত হয়েছিল, তাতে গমের উপকার হয়েছে। তাছাড়া শীত বেশি দিন পড়েছে, এতে গমের ফলন ভালো হয়েছে এবং এ বছর অধিকাংশ কৃষক বি-ডবলুএমআরআই-৩ জাতের গম চাষ করেছেন। এ জাতের গম ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী।’
কল্যাণ: গতকাল ঝিকরগাছার বারবাকপুর মাঠে গম কেটে মাথায় করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন কৃষকেরা।