নিজস্ব প্রতিবেদক, মনিরামপুর
যশোরের মনিরামপুরে ৫ হাজার টাকার জন্য কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত মিন্টু হোসেন (৪০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় জখম হয়েছেন একই পরিবারের চারজন। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়। এ দিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ফারুক ও ছোট সাব্বির নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় মূলহোতা বড় সাব্বির পলাতক রয়েছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় মনিরামপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণপাশে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহত মিন্টু হাকোবা গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে। হামলার শিকার মিন্টুর দুই ভাই সেন্টু ও পিকুল চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে সেন্টুর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। হামলার শিকার পিকুল হোসেন জানান, হাকোবা এলাকার সাব্বির হোসেন নামে এক ব্যক্তি তার ভাই সেন্টুর চা দোকানে এসে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দেয়ায় সেন্টুর চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিতে যায় সাব্বির। এ সময় তিনি বাধা দিলে সাব্বির চলে যায়। পরে দলবল নিয়ে এসে তাদের তিন ভাইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে।
নিহত মিন্টুর বাবা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘দুই বছর আগে আমার মেঝ ছেলে সেন্টুর ভ্যান চুরি হয়ে যায়। তখন হাকোবা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আজিম নতুন ভ্যান কেনার জন্য আমাদের পাঁচ হাজার টাকা সহায়তা দেন। টাকা দেয়ার সময় আজিম বলেছিল, এই টাকা ফেরত দেয়া লাগবে না। কিন্তু সেই টাকা একমাস ধরে আমাদের কাছে দাবি করছে হাকোবা এলাকার সাব্বির নামে এক ব্যক্তি। আমরা বলেছিলাম আজিমকে সঙ্গে আনলে টাকা দেব। কিন্তু সাব্বির কাউন্সিলর আজিমকে একদিনও সঙ্গে আনতে পারেননি।’
আব্দুল আজিজ আরও বলেন, ‘আমরা সাব্বিরের বিষয়ে আজিম কাউন্সিলরকে জানালে তিনি বলেন, আমি সাব্বিরকে টাকা নিতে বলিনি। এরপর গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ছেলের চা দোকানে এসে সাব্বির ফের টাকা চায়। টাকা না পেয়ে নানা হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এ সময় আমরা এগিয়ে এসে বাধা দিলে সাব্বির চলে যায়। পরে ৫-৬ জন সঙ্গী নিয়ে এসে সাব্বির আমার তিন ছেলে ও আমাদের স্বামী স্ত্রীর ওপর হামলা করে পিটিয়ে ও কুপিয়ে সবাইকে আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ আসার পর ওরা পালিয়ে যায়। এরপর আমাদের পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমার বড় ছেলে মিন্টুর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শুক্রবার মেঝ ছেলেকেও একই হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। কিন্তু রাতে বড় ছেলে মিন্টু মারা গেছে। মেঝ ছেলের অবস্থাও ভালো না। মনিরামপুর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই অরূপ ঘোষ হামলার শিকার মিন্টুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এসআই অরূপ বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ ও দুজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা সাব্বির ও ফারুক নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছি। প্রধান আসামিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।’ এদিকে খুনে জড়িতদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল সন্ধ্যায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।