নিজস্ব প্রতিবেদক: লিবিয়ায় মানব পাচার চক্রের প্রধান আসামি রকিবুল ইসলামসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আটককৃতরা হলো নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের রকিবুল ইসলাম ফারাজি (৫৭), যশোরের অভয়নগরের ধূলগ্রামের আরশাদ আলীর মেয়ে বর্তমানে খুলনার ফুলতলা উপজেলার বেজেরডাঙ্গা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী শিরিনা আক্তার (৩৫), অভয়নগর উপজেলার ধূলগ্রামের আরশাদ আলীর স্ত্রী হাফিজা বেগম (৫৫) ও আরশাদ আলীর মেয়ে সুমনা আক্তার (২৯)।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, ১০ ডিসেম্বর শনিবার পিবিআই অফিস থেকে এদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্ত করে দেখা গেছে মা হাফিজা ও মেয়ে সুমনার অ্যাকাউন্টে মার্চ মাসে ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই হাবিবুর রহমান বলেন, অন্য একটি মামলার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআই অফিসে আটককৃতদের ডাকা হয়। এরপর এদেরকে মানব পাচার মামলায় আটক করা হয়েছে।
কালিয়া উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম মৃধা মামলায় বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে নাইম মৃধা ও ভাগ্নে জহিরুল ইসলাম বৈধভাবে লিবিয়ায় যায়।
লিবিয়ায় যাওয়ার পর তার ছেলে ও ভাগ্নে তাকে জানায় কালিয়া থানাধীণ সাতবাড়িয়া গ্রামের এক ব্যক্তি তাদেরকে বেশী বেতনে লিবিয়া থেকে ইতালিতে পাঠিয়ে দিতে পারবে। সেখানে গেলে তাদের বেতন হবে মাসিক ১ লাখ টাকা। রবিউল ইসলাম মৃধাকেও সেই ব্যক্তি ফোন করে তার ছেলে নাইম মৃধা ও ভাগ্নে জহিরুল ইসলামকে নিরাপদে ইতালীতে পাঠিয়ে দেবে মর্মে আশ^স্ত করে। অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় জানতে না পারায় রবিউল ইসলাম মৃধা তার ছেলে নাইম মৃধা ও ভাগ্নে জহিরুল ইসলামকে ইতালিতে পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করে।
এর ৫/৬ দিন পর লিবিয়া থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মাধ্যমে রবিউল ইসলাম মৃধাকে মোবাইলে ফোন করে নাইম মৃধা ও ভাগ্নে জহিরুল ইসলামকে আটক করে মুক্তিপণ দাবি করে মারপিট করে। রবিউল ইসলামকে বলে আপনার ছেলে ও ভাগ্নেকে বাঁচাতে হলে বিকাশ ও ব্যাংকে টাকা পাঠাতে হবে।
পরবর্তীতে রবিউল ইসলাম মৃধা বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে ছয়লক্ষ ষাট হাজার টাকা প্রেরণ করে। এরপর থেকে রবিউল ইসলাম মৃধার ছেলে ও ভাগ্নের সাথে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় রবিউল ইসলাম মৃধা নড়াইল মানবপাচার প্রতিরোধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে করেন।
মামলা নং-০৯/২০২২, আদালতের আদেশে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার যশোর মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে এসআই (নিঃ) হাবিবুর রহমানকে নিয়োগ করেন। সিআর মামলাটি অনুসন্ধান কালে প্রকৃত অপরাধীদের সনাক্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেন। তদন্তকালে দেখা যায় আটক হাফিজা ও সুমনার একাউন্টে মার্চ মাসে ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।