নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত দুই দিন এ জেলায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এ অবস্থায় মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র লোডশেডিং। প্রতিদিন ৪-৫ বার করে লোডশেডিং হচ্ছে। এতে ঘেমে-নেয়ে একাকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) যশোরের বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিরতণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ওজোপাডিকো-১ ও ২ এর অধীনে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ৫০ মেগাওয়ার্ড। চাহিদার বিপরীতে সেখানে মিলছে ৪০ মেগাওয়ার্ড। প্রতিদিন ঘাটতি থাকছে ১০ মেগাওয়ার্ড। ফলে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে ঘাটতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
যশোর শহরের এমএম আলী রোড এলাকার (সমবায় ব্যাংকের পেছনে) বাসিন্দা গৃহিনী শিলা খাতুন জানান, শুক্রবার রাত ১২ টা থেকে শনিবার ভোর রাত পর্যন্ত চারবার বিদ্যুৎ চলে যায়। এ সময় গরমে তাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। সারা দিন রোজা থেকে ঘুমাতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
শহরের খড়কি এলাকার রিকশা চালক ফারুক হোসেন বলেন, রোদে গা পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। এরপর রাতে আবার লোডশেডিং হচ্ছে। দিনের ক্লান্তি নিবারনে রাতে নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের সুযোগ নেই।
যশোর বিমানবাহিনীর আবহাওয়া অফিস মতে, শনিবার যশোর জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (বেলা ৩ টার দিকে) ছিল ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবারও একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। অন্যদিকে গতকালসহ টানা ১৪ দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়। গতকাল সেখানে তাপমাত্রা উঠেছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর আগে ২০১৪ সালে যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওই ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল; অর্থাৎ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে উঠেছে।
এদিকে খুলনা বিভাগের জেলাসমূহের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। দেশের অন্যান্য স্থানের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। এ অঞ্চলে বাতাসের সঙ্গে লু হাওয়া ছিল।
এ অবস্থা আরও কিছু দিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আগামী ৭২ ঘণ্টা পর তাপমাত্রা কমার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। এ ছাড়া দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টা তথা তিন দিনের মধ্যে তাপমাত্রা কমতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, দুই একদিনের মধ্যে দেশের কিছু কিছু স্থানে বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে (সিলেট অঞ্চল) স্বল্প পরিসরে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। তবে আরও বড় পরিসরে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হতে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।