নিজস্ব প্রতিবেদক
যৌতুক না পেয়ে দুই কন্যা সন্তানের মা গৃহবধূ কাকলী বেগমকে (২৮) হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যশোরের অভয়নগর উপজেলার রাজঘাট স্বামীর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ গত ২ এপ্রিল উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করেন।
নিহত কাকলী গোপালগঞ্জ সদরের সুলতান শাহী গ্রামের শহীদ শেখের একমাত্র মেয়ে। গত ২০১৪ সালে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার রাজঘাট মোড় এলাকার সোহরাব কাজীর ছেলে শামীম কাজী সাথে বিবাহ হয়। তাদের সংসারে ৬ বছর ও আড়াই বছরের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। পরিবার বলছে, বিয়ের পর থেকেই স্বামী শামীম কাজী, তার শ্বশুর সোহরাব কাজী, শাশুড়ি ছবেদা বেগম ও দেবর দাউদ কাজী দফায় দফায় যৌতুকের জন্য কাকলীকে নির্মম নির্যাতন করতে থাকে।
মেয়ের সুখ শান্তির কথা চিন্তা করে কয়েক দফায় প্রায় ১০ লাখ টাকা যৌতুক দেয় কাকলীর পরিবার। সম্প্রতি আবারও ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে স্বামী শামীম ও তার পরিবার।
নিহত কাকলীর বাবা শহীদ শেখ বলেন, ফের এক লাখ টাকা নেয়ার জন্য গত বছরের ২৪ অক্টোবর মেয়ে ও তার দুই সন্তানকে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আমি টাকা দিতে অপরাগতায় মেয়েকে আমার কাছে রেখে দেই। এরই মধ্যে সুকৌশলে মেয়েকে তার শাশুড়ি ছবেদা বেগম আমার বাড়িতে এসে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে আমার মেয়েকে তারা আবারও মারপিট করে। খবর পেয়ে আমরা তাদেও বাড়িতে গিয়ে মেয়ের দুই সন্তানের কথা বিবেচনা করে আইনের আশ্রয় না নিয়ে জামাই ও তার পরিবারের আশ্বাসে ফিরে আসি। কিন্তু নির্যাতন চালাতে থাকে তারা। এরই মধ্যে গত ২ এপ্রিল পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে আমার মেয়েকে হত্যা করে। পরে লাশ ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রেখে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করে।
মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে কাকলীর স্বামী পক্ষের কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। অভয়নগর থানার ওসি (তদন্ত) মিলন কুমার মন্ডল বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে ময়না তদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।