নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশে’ সংগঠনটির জেলা সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি বলেছেন, খুলনা অভিমুখী রোডমার্চে যশোর থেকে যেসব বিএনপি কর্মীরা অংশ নিবে তারা আর যশোরে ফিরতে পারবেন না। সোমবার বিকালে শহরের চৌরাস্তা মোড়ে তিনি এই হুশিয়ারি দেন। বিএনপির আগুন সন্ত্রাসী জ্বালাও পোড়াও এবং পদযাত্রার বিরুদ্ধে এই শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে জেলা আওয়ামী লীগ। বিএনপির রোডমার্চের আগের দিন সোমবার বিকেলে যশোরে শান্তির সমাবেশের নামে শক্তির মহড়া দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। জেলার আটটি উপজেলার নেতাকর্মীদের নিয়ে শান্তি সমাবেশ হয়।
সমাবেশে যশোরের বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘আগামি ২০৪১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। ফলে লন্ডন থেকে তারেকের কথা শুনে যদি যশোরে বিশৃঙ্খলা করেন তাহলে কিন্তু আপনারা বিপদে পড়বেন। যারা বিএনপির নেতাদের কথা শুনে ঢাকার সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন, পদযাত্রা রোডমার্চে অংশ নিবেন তাদের আর যশোরে ফিরতে দেওয়া হবে না। আপনাদের বাড়ির পাশে কিন্তু অনেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর বসাবাস।
তারা কিন্তু আপনাদের বাড়িঘর সব চিনে। ফলে পরবর্তীতে কি ঘটবে সেটা আর এখানে বললাম না। কালকের রোডমার্চে যশোরে যদি আগুন সন্ত্রাসী করেন; তাহলে কিন্তু খেলা হবে। তারেকের কথা শোনে যশোরে কিছু করলে (বিশৃঙ্খলা) বিপদে পড়বেন। মামলা খাবেন। মামলায় যদি না থামেন; তাহলে কিন্তু আমাদের কাছে মার খাবেন। যশোরের আট উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদককে নির্দেশ নিয়েছি; বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে খোঁজ খবর রাখতে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার’।
ভিসানীতি সম্পর্কে শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘বিএনপি ভিসানীতি নিয়ে হাসাহাসি করছেন। আওয়ামী লীগ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ^াসী। কারো ভিসানীতি পরোয়া করে না। বিএনপি এবার রাজপথে আগুন সন্ত্রাসী করলে তারা এবার ভিসানীতির আওতায় আসবে। শেখ হাসিনার নেতত্বে এবারও নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র করলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এবার কঠোরভাবে মোকাবেলা করবে। বাঁচতে চাইলে এবার বিএনপি নির্বাচনে আসবে, তা নাহলে নিজেদের কর্মীদের কাছেই নেতারা মার খাবে। যশোরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবন্ধ থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘গ্রুপিং বাদ দিয়ে সবাই একপথে চলুন। সরকারের উন্নয়ন জনগণের দৌরগোড়ায় পৌছে দেন। নেত্রী যাকেই মনোনয়ন নিবেন, তার হয়ে কাজ করে নৌকাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান শাহীন চাকলাদার।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, মাত্র ১২ ঘণ্টা আগের নির্দেশে আজকের এই সমাবেশ। এই সমাবেশ জনসমুদ্ধে রুপ নিয়েছে। যদি ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এই সমাবেশের আয়োজন করতাম; তাহলে শহরের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জায়গা দিতে পারতাম না। বিএনপির নেতাকর্মীরা এখনো সাবধান হয়ে যায়; আন্দোলনের নামে কোন ষড়যন্ত্র ও মানুষকে পুড়িয়ে মারেন না। সময় আছে জনগণের কাছে মাফ চান; জনগণের কাছে যান। যদিও জনগণ আপনাদের নিপীড়ন নির্যাতন মাফ করবে না। কারণ জনগণ আপনাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না। দেশের উন্নয়নের মডেলে কে না থাকতে চাই। তাই জনগণের মুখে এখন একটাই কথা; উন্নয়নের সরকার, শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার। এসময় তিনি নিজ নেতাকর্মীতের ঐক্যবন্ধ থেকে সরকারের উন্নয়ন বার্তা জনগণের কাছে পৌচ্ছে দিতে বলেন।
যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ডা. নাসির উদ্দিন, কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সামির ইসলাম পিয়াস, ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ, মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান, ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ, জেলা কৃষক লীগের সহ সভাপতি ইয়াকুব আলী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল, যশোর পৌরসভার ৬ নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলমগীর কবির সুমন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী। এর আগে যশোরের বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের নেতৃত্বে মিছিলসহকারে বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ শান্তিসমাবেশে অংশ নেয়।