নিজস্ব প্রতিবেদক: পথে ঘাটে যেখানে সেখান খুব ছোট ছোট ফুলে ভরা একটি গাছ দেখা যায়। গ্রীষ্মকালে একটু বর্ষা পেলেই এই গাছ গুলো সবুজ ডগমগে হয়ে বড় হয়ে ওঠে। অনেকেই গাছটি সম্পর্কে জানেন না। এটি একটি সাক্ষাৎ মরণ ফাঁদ! বাংলা কোনো নাম পাওয়া যায়নি।
অনেকটা ধনে গাছের মতো দেখতে ঝোপের মতো হয়ে থাকে। পাতা সবুজ এবং ফুল গুলি সাদা। এগুলো একধরনের বিষাক্ত আগাছা। উদ্ভিদটি সাধারণত উচ্চতায় ১ থেকে ১.৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট বয়সে ফুল ফোটে। একটি গাছ বাঁচে তিন থেকে চার মাস। এ সময়েই তিনবার ফুল ও বীজ হয়। গোলাকার, সাদা, আঠালো এবং পিচ্ছিল হয়ে থাকে এর ফুল। পার্থেনিয়ামের একটি গাছ থেকে প্রায় ২৫ হাজার বীজ হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম পার্থেনিয়াম হিস্টেরোফোরাস।
রাসায়নিক উপাদান
পার্থেনিয়ামে রয়েছে পার্থেনিন নামক ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান। এতে রয়েছে Sesquiterpene Lactones নামক টক্সিন বা বিষ। এই বিষ গঠিত হয় Caffeic acid, Vanillic acid, Ansic acid, P-anisic acid, Chlorogenic acid, এবং Parahydroxy benzoic acid দ্বারা।
ক্ষতিকর প্রভাব
১. পার্থেনিয়াম মানুষের হাতে-পায়ে লাগলে প্রাথমিক অবস্থায় হাত-পা চুলকায়, লাল হয়ে যায় এবং পরে ত্বকে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
২. পার্থেনিয়ামে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘন ঘন জ্বর, অসহ্য মাথাব্যথা ও উচ্চরক্তচাপে ভুগতে পারে।
৩. দশ মিটার দূর থেকেও এই আগাছাটির ফুলের রেণু মানুষের এলার্জি, হাঁপানি রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
৪. পার্থেনিয়াম আগাছা যুক্ত মাঠে গবাদিপশু চরলে পশুর শরীর ফুলে যায়, তীব্র জ্বর, বদহজমসহ নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়।
৫. এই গাছ খেলে গাভীর দুধ তিতা হয়, যা দীর্ঘদিন পান করলে এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
৬. এই বিষাক্ত আগাছা এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে যা কীটপতঙ্গ ও ফসল উভয়ের ক্ষতি করে।
৭. পার্থেনিয়াম আগাছা জমিতে থাকলে ফসলের উৎপাদন প্রায় চল্লিশ শতাংশ কমে যায়।
৮. পার্থেনিয়ামের রেণু বাতাসে মিশে টমেটো, মরিচ ও বেগুনের ফুল ঝরিয়ে দেয়।
৯. এই গাছ থেকে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণের ফলে ডাল জাতীয় ফসলের গাছের নাইট্রোজেন তৈরিতে সহায়তাকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে দেয়।