যশোর সদর উপজেলার একটি দাখিল মাদ্রাসায় একজন সহকারী মৌলবীকে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে সুপার পদে নিয়োগ দিয়ে এমপিও অনুমোদন করিয়ে দেয়া হয়েছে। এর পেছনে কাজ করেছে শিক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তার নিয়োগ বাণিজ্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যের এ ঘটনা হাজারো ঘটনার মধ্যে একটি। ওই শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে যোগসাজসে এই নিয়োগ প্রদানে এ কারচুপি করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এ কাজটি করা হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্রের মাধ্যমে জানানো হয় এমপিওভুক্ত মাদ্রাসায় কোন সহকারী মৌলভী সরাসরি সুপার পদে নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করতে পারবেন না। একমাত্র সহকারী সুপারই সুপার পদে আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে সহকারী সুপার পদে আবেদন করতে একজন সহকারী মৌলভীর ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। আর সুপার পদে আবেদন করতে সহকারী সুপারের ৫ বছরের অভিজ্ঞতা লাগবে। কিন্তু ওই সহকারী মৌলভী শিক্ষককে সব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে যশোর সদর উপজেলার ওই দাখিল মাদ্রাসায় ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে সুপার পদে নিয়োগ ও এমপিও পাইয়ে দেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। তিনি কোন মাদ্রাসায় সহকারী সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেননি। তিনি একটি মাদ্রাসায় সহকারী মৌলভী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বলেছেন, সহকারী সুপারের কোন অভিজ্ঞতা তার নেই। কিন্তু তিনি সুপার হয়েছেন। এমপিওভুক্ত হয়ে নিয়মিত বেতন-ভাতাও পাচ্ছেন। তার তো সুপার পদে আবেদন করার যোগ্যতাই নেই। কীভাবে তার নিয়োগ হলো এটা বোধগম্য নয়।
যারা সরকারি চেয়ার পেতে বসে আছেন তাদের শিক্ষা উন্নয়নের ভাবনা নেই, কাজের নামে আছে শুধু নিয়োগ বাণিজ্যের গন্ধ শুকে বেড়ানো। টাকার লোভে যোগ্যদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা নাজুক করে তোলে। নিয়োগে দুর্নীতি বন্ধের লক্ষ্যে প্রধান শিক্ষক বাদে অন্য শিক্ষক পদে নিয়োগ হয় এনটিআরসির মাধ্যমে। কিন্তু তাতে কিছু হয়নি। তারা ফরমান জারি করলো, সরকার নিয়োগ দিয়ে পাঠিয়েছে তাতে কি হয়েছে। যিনি যোগদান করতে আসবেন তাকে ক্ষতি পুষিয়ে দিতে হবে। নতুবা যোগদান করতে দেয়া হবে না। হয়েছেও তাই। চাকরির একটা প্রয়োজন তাই ঘটি-বাটি, ঝুলি কাঁথা বেঁচে অথবা শেষ সম্বল অন্য কিছু খুইয়ে কর্মকর্তার ক্ষতি পোষাতে হয়েছে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ অবস্থা চলছে। আমরা মনে করি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়েগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে জরুরি ব্যবস্থা নেয়া উচিত।