নিজস্ব প্রতিবেদক
পাওনা টাকা চাওয়ায় যশোর শহরতলীর ছোট শেখহাটিতে মাংস বিক্রেতা এবং পরকীয়ার জের ধরে ঝিকরগাছায় যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।
যশোর শহরতলীর ছোট শেখহাটিতে নিহত মাংস বিক্রেতা হলেন রিপন হোসেন দিপু (৩০)। তিনি ছোট শেখহাটি গ্রামের রফিকুল ইসলাম মনুর ছেলে। আর ঝিকরগাছা নিহত যুবকের নাম তৌফিক হাসান (২৭)। তিনি কাটাখাল কৃষ্ণনগরের শাহাদত মোল্লার ছেলে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিকরগাছা জানান, রান্নাঘরে স্ত্রীর সঙ্গে দেখে ফেলায় যশোরের ঝিকরগাছায় ছুরিকাঘাতে তৌফিক হাসান নামে বন্ধুকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে বন্ধু কিসমত বাবু ওরফে ক্যাসেট বাবু। শনিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ঝিকরগাছা কাটাখাল এলাকার আফিল রোডের ক্যাসেট বাবুর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘাতক কিসমত বাবু ওরফে ক্যাসেট বাবু (২৫) আফিল রোডের কাশেম মোড়লের ছেলে। ঘটনার পর থেকে ক্যাসেট বাবু ও তার স্ত্রী রিয়া খাতুন (২০) পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাসেট বাবুর স্ত্রী রিয়া খাতুনের সঙ্গে তৌফিকের পরকীয়া সম্পর্ক চলছি। শুক্রবার রাতে রান্না ঘরে স্ত্রীর সঙ্গে তৌফিককে দেখে ফেলেন বাবু। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার সকালে মুঠোফোনে তৌফিককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসেন ক্যাসেট বাবু। পরে তাকে ছুরিকাঘাত করেন। একপর্যায়ে তাকে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎকরা তৌফিককে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় তার।
নিহতের খালা রত্না খাতুন বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় আফিল ফার্মে কাজে যাচ্ছিল তৌফিক। বাবুর মুঠোফোনের কল পেয়ে আফিল রোডে তাদের বাড়িতে যায় তৌফিক। চাচাতো ভাই মো. শাহিন বলেন, ক্যাসেট বাবু ও তৌফিকের মধ্যে বন্ধুত্ব সম্পর্ক ছিল। দুজন দুজনের বাড়িতে যাতায়াত ছিল।
ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ভুঁইয়া বলেন, পরকীয়ার জের ধরে এক বন্ধুর ছুড়িকাঘাতে আরেক বন্ধু নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে। দ্রুত তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে।
এদিকে, যশোর শহরতলীর ছোট শেখহাটিতে ছুরিকাঘাতে রিপন হোসেন দিপু (৩০) নামে এক মাংস বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। শুক্রবার মধ্য রাতে ছুরিকাঘাতের পর শনিবার বিকেল ৩টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত রিপন হোসেন দিপুর বাবা মনু জানান, দিপু একই এলাকার রাব্বি হোসেন, আসাদুল ইসলাম ও তপুর সাথে গরুর মাংস বানানোর কাজ করতো। তাদের কাছে দিপুর এক হাজার টাকা পাওনা রয়ে যায়। সেই টাকা চাইতে তাদের বাসায় যায় দিপু। গভীর রাতে তারা টাকা দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়ির পাশে বাঁশবাগানে নিয়ে দিপুকে ছুরিকাঘাত করে ফেলে পালিয়ে যায়। দিপুকে ভোরে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল সাড়ে তিনটার সময় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিচিত্র মল্লিক জানান, সকালে গুরুতর অবস্থায় তাকে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে তার মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। তার মৃতদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিষয়টি জেনেছি, এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।