নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সর্বশেষ আসরে রানার্সআপ আরএন রোড ক্রীড়া চক্র। চলতি বছরে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক শাহারিয়ার সাকিব ও ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি এইচপি ক্যাম্পে সুযোগ পাওয়া অরিদুল ইসলাম আকাশ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় প্রাথমিক দলে সুযোগ পাওয়াম বাঁহাতি পেসার রাহুল হোসেনসহ যশোরের বয়সভিত্তিক স্তরের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গঠন করে। তবে এসব খেলোয়াড়দের কখনো একসাথে পাননি কোচ কামরুজ্জামান সাজু। রোববার লিগের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে সবাইকে একসাথে পেয়েছিলেন। সুপার ফোরে যেতে হলে জয়ের বিকল্প ছিল না আরএন রোডের সামনে। এমন ম্যাচে একাদশে ফেরেন শাহারিয়ার সাকিব ও অরিদুল ইসলাম আকাশ। এদুজনকে একাদশে পেয়ে উজ্জীবিত ইমন ফারাজি হ্যাটট্রিকসহ নেন ৬উইকেট। মিকাইলের ব্যাট থেকে আসে ফিফটি, সাথে নিলয় ও আকাশ একসাথে জ¦লে উঠেন। তাতে লিগের অন্যতম দূর্বল দল রাইজিং স্টারের বিপক্ষে বড় জয় পেয়েছে আরএন রোড ক্রীড়া চক্র। ১৫৬ রানের জয়ে সবার আগে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে দলটি।
গ্রুপ ‘বি’তে থাকা দলগুলোর মধ্যে আরএন রোড ক্রীড়া চক্র ও ম্যাগপাই ক্লাব, জাগরনী সংসদ ও রাইজিং স্টার ক্লাব গ্রুপ পর্বের সব ক’টি ম্যাচ শেষ করেছে। অর্থাৎ পাঁচ ম্যাচ খেলে দল দুটির সংগ্রহ সাত পয়েন্ট। জাগরণী সংসদ পাঁচ ও রাইজিং স্টার ক্লাব সংগ্রহ করেছে দুই পয়েন্ট।
গ্রুপে বাকি রয়েছে একটি ম্যাচ। যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী মঙ্গলবার। এ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ন্যাশনাল স্পোর্টিং ক্লাব ও প্রদীপ্ত পথ ক্রিকেট একাডেমি। এ ম্যাচে প্রদীপ্ত পথ ক্রিকেট একাডেমি জয় পায় তাহলে তাদের পাশাপাশি আরএন রোড ক্রীড়া চক্র ও ম্যাগপাইয়ের হবে সমান সাত পয়েন্ট করে। তখন রান রেটে যে দু’টি দল এগিয়ে থাকবে তারাই যাবে পরের রাউন্ডে।
এমন সমীকরণ থাকা অবস্থাতেও একটি বিষয় সুষ্পষ্ট, তা হলো আর এন রোড ক্রীড়া চক্রের রান রেট ১.১২। এই রান রেট নিয়ে তাদের পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত। কারণ ম্যাগপাইয়ের রান রেট ০.৫০ ও প্রদীপ্ত পথের ০.০৯। ম্যাগপাইয়ের আর কোন ম্যাচ নেই। প্রদীপ্ত পথের বাকি থাকা ম্যাচটিতে যদি তারা বড় জয় পায় তাহলে তাদের রান রেট বেড়ে যাবে। তখন তারাই চলে যাবে পরবর্তী রাউন্ডে। আর যদি তারা পরাজিত হয় তাহলে ম্যাগপাই যাবে পরের রাউন্ডে।

এদিন টস জিতে আরএন রোডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় রাইজিং স্টারের অধিনায়ক আবির হোসেন। মিকাইলের সাথে আরএন রোডের হয়ে ওপেন করতে নামেন লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করা বাঁহাতি স্পিনার ইমন ফারাজি। তাতে গত কয়েক ম্যাচে ওপেনিংয়ে ধুকতে থাকা আরএন রোড দারুন শুরু পায়। ৭৯ রানে ইমন (২২) সাজঘরে ফিরলে ১৬ ওভার বল স্থায়ী ওপেনিং জুটি। ইমনের পর মিকাইলও বেশি সময় ক্রিজে ছিলেন। তবে ফেরার আগে অর্ধশতক করেন মিকাইল। ৫৪ বলে ফিফটি করার মিকাইল ৫৮ বলে ৫টি চার ও ২টি ছয়ে ৫৯ রান করেন। এই দুজনের আউটের পরই ছোট একটা বিপর্যয় ঘটে। তবে তা অনুভব করতে দেননি শাহারিয়ার সাকিব। নিলয় রায়কে সঙ্গে নিয়ে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান দলকে। দুজনই সাজঘরে ফিরে যান বড় অসময়ে। দারুন ব্যাটিংয়ে লিগের প্রথম সেঞ্চুরির দিকে যাচ্চিলেন তখনই ৮৮ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। ৭৩ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ২টি ছয়ের মার। নিলয় আউট হন ৪০ বলে ৩টি চার ও ২টি ছয়ে ৩৭ রানে। শেষ দিকে অরিদুল ইসলাম আকাশের ১৮ বলে ১টি চার ও ২টি ছয়ে ২৭ রানের ক্যামিওতে নির্ধারিত ৪৫ ওভারে ২৬৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায়। বল হাতে রাইজিংয়ের আবির হোসেন ৫৪ রানে চারটি, সাকিব হোসেন ৫৬ রানে দু’টি এছাড়া একটি উইকেট নিয়েছেন সোহান হোসেন।
রান তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় রাইজিং স্টার। শেষ পর্যন্ত ৪০ ওভার ৩ বল খেললোও ১১৩ রানের বেশি করতে পারেনি।
রাইজিংয়ের ব্যাটিং ইনিংসে অয়ন ঘোষ ১৭ বলে তিনটি চারে ১৪, রিয়াদ ইসলাম ৩৬ বলে একটি চার ও ছয়ে ১৯, আবির হোসেন ১৮ বলে তিনটি চারে ১৪, সাগর ১৪ বলে একটি চার ও ছয়ে ১১, সোহান হোসেন ৩২ বলে একটি চারে ১০, আজমান হোসেন ৬৬ বলে ১৩ ও অন্তু ৩২ বলে দু’টি চারে অপরাজিত ১২ রান করেন। বল হাতে আরএন রোডের ইমন ফারাজি হ্যাটট্রিকসহ ২৩ রানে ছয়টি, শিবলী ২২ রানে দু’টি এছাড়া একটি উইকেট নিয়েছেন অরিদুল ইসলাম আকাশ।