ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপি রাসায়নিক সারের দাম প্রতি কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। তাৎক্ষণিক কার্যকর এ দামের ফলে জেলার কৃষকদের কমপক্ষে ২শ’ ১০ কোটি টাকা অতিরিক্ত চাষাবাদের জন্য গুণতে হলেও ডিলার ও মজুতদারেরা বেশ খোসমেজাজে।
এ সিদ্ধান্তের প্রতি ধন্যবাদও জানিয়েছেন তারা। কেননা, তাদের মজুদ বিষয়ে তেমন কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি। ফলে আগের দামে কেনা সার তারা অবলিলায় বেশি দামে বেচবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন কৃষকরা প্রয়োজনের তুলনায় কিছুটা বেশি সার ব্যবহার করে থাকেন। এতে তাদের উৎপাদন খরচ যেমন বাড়ে, তেমনি ক্রমাগত রাসায়নিক সারের প্রয়োগ বাড়ায় জমির উর্বরতাও নষ্ট হয়। কৃষকরা একটু সচেতন হলে ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়া যায়, জানালেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
ঝিনাইদহের কালিচরণপুরে কথা হয় বেশ ক’জন চাষির সাথে। তারা জানালেন, ১৬ টাকা কেজি দরের সার ২১ টাকায় কিনতে হলে সার বাবদ তাদের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ বেশি দিতে হবে। তবে চাষিদের এ অর্থ কোথা থেকে ব্যবস্থা বা সমন্বয় হবে তারা তা জানেন না। ফলে হয় তারা প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমাণে সার জমিতে প্রয়োগ করবেন, না হয় আবাদ কমিয়ে দেবেন।
শৈলকুপার সেখরা বাজারে আলাপকালে খুচরা সার ব্যবসায়ি আয়ুব আলি জানালেন, এখন রাসায়নিক সারের ব্যাপক চাহিদা না থাকলেও অনেকেই সার কিনতে আসছেন। কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বৃদ্ধির ফলে সার কিনতে এসে চাষিরা বিতন্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন। তাদের বোঝাতে বেগ পেতে হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, জেলায় আগামী মৌসুসের জন্য ১৭০,৬৯০ টন ইউরিয়া, ৭২,০১০ টন ট্রিপল সুপার ফসফেট বা টিএসপি, ৯৩,৩৫৮ টন ডাই এমোনিয়াম ফসফেট বা ডিএপি এবং ৮১,৯৯৯ টন মিউরিয়েট অব পটাশ বা এমওপি সারের চাহিদা দেয়া হয়েছে, তাতে জেলার কৃষকদের ২শ’ ১০ কোটি টাকার মত অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে। সারভিত্তিক অতিরিক্ত ব্যয়ের হিসেব হলো, ইউরিয়া বাবদ ৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার, টিএসপি বাবদ ৩৬ কোটি ৫০ হাজার, ডিএপি বাবদ ৪৭ কোটি এবং এমওপি বাবদ ৪১ কোটি টাকার মত। এ অর্থ দিয়েই কৃষকদের কিনতে হবে রাসায়নিক সার।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ খামারবাড়ির উপপরিচালক আসগর আলির সাথে কথা বললে তিনি জানান, সারের ওপর থেকে ভর্তুকি তুলে নিতে সরকার নীতি গ্রহণ করেছে এবং পর্যায়ক্রমে সে অনুযায়ি তা চলমান।