নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজের অবর্তমানে স্ত্রী পরকীয়াতে জড়িয়েছে অভিযোগ তুলে, গোপাল বিশ্বাস (২৫) নামে এক ব্যক্তি গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর ব্রিজঘাট হালদার পাড়ায়। অগ্নিদগ্ধ গোপাল ঝিনাইদহের মথুরাপুর এলাকার বনমালী বিশ্বাসের ছেলে। বর্তমানে তিনি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শরীরের ৩৫ ভাগ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। কোটচাঁদপুর ব্রিজঘাট হালদারপাড়ার পরিতোষ হালদারের মেয়ে রুপা হালদারের স্বামী।
পরিবার ও স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় ৩ বছর আগে রুপা হালদার ও গোপাল বিশ্বাসের বিয়ে হয়। প্রথম দুই বছর তাদের সংসার ভালোই চলছিল। এর মধ্যে ওই দম্পতির সংসারে একটি সন্তানও হয়েছে। হঠাৎ করে কাউকে কিছু না বলে পালিয়ে যান গোপাল বিশ্বাস। এরপর তার কোনো খোঁজ পায়নি তার পরিবার। গত ৩ দিন হলো তাকে কোটচাঁদপুর এলাকায় দেখা যায়। তবে তিনি শ্বশুর বাড়ি না গিয়ে এদিক সেদিক ঘুরছিলেন। গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেন তিনি মারা যাচ্ছেন। এ সময় তার স্ত্রী তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে কিছুক্ষণ পর শ্বশুরবাড়িতে যান গোপাল বিশ্বাস। সেখানে তাদের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। এর একপর্যায়ে স্ত্রীর সামনেই শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন তিনি। এ সময় তার স্ত্রী বাধা দিলেও তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে এ ঘটনা ঘটান গোপাল। এ সময় পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন। এ বিষয়ে গোপালের স্ত্রী রুপা হালদার বলেন, ‘৩ বছর আগে তার (গোপাল) সাথে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমরা ভালোই ছিলাম, আমাদের একটা সন্তানও আছে। গেল এক বছর হঠাৎ করে সে হারিয়ে যায়। কিছুদিন হলো এলাকায় আসছে। কিন্তু আমার সাথে দেখা হয়নি। শুক্রবার রাতে ফোন করে বলে, আমি মৃত্যুর মুখে, তুমি ভালো থাকো। এ কথা শুনে আমি তার সাথে দেখা করার জন্য অনুরোধ করি। সে আমার অনুরোধে বাড়িতে এসে ঘটায় এ দুর্ঘটনা।’ তবে ভুক্তভোগী গোপাল বিশ্বাসের দাবি তার অবর্তমানে স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত হয়েছেন। শ্বশুরবাড়ি এলাকায় ফিরে তিনি এ তথ্য জেনেছেন। এরপর কয়েক দিন ধরে ওই এলাকায় তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেন তিনি। অগ্নিদগ্ধ গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘আমি পালিয়ে যায়নি। আমি তার জন্য টাকা রোজগার করতে গিয়েছিলাম। তবে বুঝতে পারিনি, এসে তাকে হারিয়ে ফেলব। আমার কাছে সব প্রমাণ আছে।’
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, আগুনে গোপালের শরীরের ৩৫ ভাগ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশংকাজনক।