নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হাবিুবুর রহমান রিপন হত্যার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ বিশ্বাস বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম দুলাল ও তার ভাই ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাসসহ জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত রিপনের স্ত্রী স্কুলশিক্ষিকা তানিয়া খাতুন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘নজরুল ইসলাম দুলাল ও তার ভাই হেলাল উদ্দিন বিশ্বাস এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের জন্য এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে। দুলাল বিশ্বাসের প্রত্যক্ষ মদদেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে’।
দুই শিশুপুত্রের মা তানিয়া খাতুন বলেন, ‘হত্যার পর হত্যাকারীরা জামিনে মুক্ত হয়ে এলাকায় এসে উল্লাস করে বেড়াচ্ছে। আমরা যাতে বিচার না পাই, মামলা যেন তুলে নিই এ কারণে আমাদের বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। হত্যার পর তারা উল্লাস করে আমার স্বামীর সমর্থকদের অন্তত ৪০/৫০ টি বাড়ীঘরও ভাংচুর করে’।
তানিয়া খাতুন বলেন, ‘খুন করার পর খুনিরা ‘বিশ্বাস বিল্ডাসের্’র মালিক দুলাল বিশ্বাসের ঢাকার অফিসে আশ্রয় নেয়। তার অফিসের সামনে থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকী আসামীদের দুলাল বিশ্বাস আশ্রয় দিয়ে ও টাকা দিয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন করিয়ে আনে। জামিন করার পর দুলালের অফিসে তারা ভুরিভোজ ও আনন্দ উল্লাস করে। খুনিরা খুন করার পর যেভাবে উল্লাস করছে তাতে আমি ও আমার পরিবার শঙ্কিত। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানাব এই হত্যার মূলহোতা দুলাল বিশ্বাস, হেলাল বিশ্বাসসহ জড়িত সকলের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির ব্যবস্থা যেন করেন’।
নিহতের স্ত্রী তানিয়া খাতুন ছাড়াও পিতা প্রবীণ স্কুলশিক্ষিক ও আওয়ামী লীগ আবাইপুর ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, চাচা জাফর বিশ্বাস, খালাতো ভাই নাসির বিশ্বাস, ভগ্নিপতি জাহাঙ্গীর ইসলাম সলোক, শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক ও শৈলকুপা উপজেলা চেয়ারম্যান এম আব্দুল হাকিম আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন মোল্লা, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান, শফিকুল ইসলাম শিমুল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব হোসেন, নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস, আবাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান উকিল মোল্লা, যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম, স্থানীয় মাতব্বর মাসুদ বিশ্বাস, মুন্নু বিশ্বাস, সুজন বিশ্বাসসহ পরিবারের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর রাত দেড়টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে অঅবাইপুর-মিনগ্রাম সড়কে পৌঁছালে দুলাল ও হেলালের লোকজন রিপন ও তার সহযোগিদের মোটবাইকের গতিরোধ করে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর যখম করে। তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাবর পরই মারা যান এই ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা রিপন। পরে ৩২ জনের নামে শৈলকুপা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
