নিজস্ব প্রতিবেদক
মালয়েশিয়ায় স্বামী মারা যাওয়ার পর প্রাপ্ত ক্ষতিপূরণের টাকা সাদিয়া আক্তার নদী নামে এক নারীকে না দিয়ে বঞ্চিত করা হয়েছে। উল্টো তাকে মারপিট করে স্বর্ণালংকার ও তিন লাখ টাকা কেড়ে নিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে শ^শুর বাড়ির লোকজন। শুধু তাই নয় অলিখিত তিনশ’ টাকার ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্প ও ৫/৬টি ফোলিও কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ সাদিয়া আক্তার নদী গতকাল বুধবার শ^শুর-শাশুড়িসহ ৬ জনের নামে আদালতে মামলা করেছেন। বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য যশোর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিত্যানন্দী গ্রামের আবু তাহের, তার স্ত্রী আকলিমা বেগম, ছেলে হাফিজুর, মফিজুর, লাল্টু এবং শহিদের স্ত্রী রেহেনা বেগম।
সাদিয়া আক্তার নদী মামলায় বলেছেন, আসামি আবু তাহেরের ছেলে আব্দুস সালামের সাথে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে এক বছর তিন মাস বয়সের আবু সাফওয়ান ফাহিম নামে একটি ছেলের জন্ম হয়। স্বামী আব্দুস সালাম মালয়েশিয়ায় চাকরিরত ছিলেন। চলতি বছরের ১৮ মার্চ মালয়েশিয়ায় মারা যান। ৬ এপ্রিল তার স্বামীর লাশ মালয়েশিয়া থেকে গ্রামের ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিত্যানন্দী গ্রামে আসে। লাশের দাফন বাবদে মালয়েশিয়ার কোম্পানি দেড় লাখ টাকা দেয়। দাফনের পরে ১২ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে ওই টাকাগুলো দাবি করেন সাদিয়ার শ^শুর। না দেয়ায় তাকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে মারপিট করা হয়। শুধু তাই নয় ঘরে থাকা আরো তিন লাখ টাকা, টিভি, ফ্রিজ, আলমারি, স্বর্ণালংকারসহ আরো দেড় লাখ টাকার মালামাল নিয়ে নেয়। এরপর ওই গৃহবধূকে আবারও মারপিটের পরে তিনটি একশ’ টাকার ননজুডিসিয়াল অলিখিত স্ট্যাম্পে এবং ৫/৬টি ডেমি পেপারে জোর পূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে তাকে একবস্ত্রে বাড়ি থেকে বের করে দেয় শ^শুরসহ সকল আসামি। সাদিয়া আক্তার বর্তমানে পিতার বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। গত ১৭ মে বিকেল ৫টার দিকে সকল আসামি বাদী সাদিয়া আক্তারের পিতা রাশেদ আলীর বাড়ি যশোর শহরতলীর শেখহাটি গ্রামে আসে। এসময় তারা মালয়েশিয়া থেকে দেয়া দেড় লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে খুন করে লাশ গুমের হুমকি দেয়া হয়।