নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের ঝিকরগাছা পৌর সদরে আয়েশা ক্লিনিকে প্রসূতি রোগীর মৃত্যু ঘটেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। জেলা সিভিল সার্জন বলেছেন অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। রোববার (৫ মার্চ) রাতে ভুল চিকিৎসার কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বজনেরা জানিয়েছেন – উপজেলার ডহর মাগুরা গ্রামের শামীমের মেয়ে গর্ভবতী ইয়াসমিন (২১)।
সে পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের আলমনগর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে প্রবাসী আশা হোসেনের স্ত্রী। ৫ মার্চ রোববার রাতে ইয়াসমিনের প্রসব বেদনা উঠলে স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তার ক্লিনিকের দালাল জাকিরের পরামর্শে আয়েশা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। রাত অনুমান দশটার পরে এনেস্থেশিয়া ডাক্তার আবু সায়েম ও তার স্ত্রী সার্জন ডাক্তার নাজনীন সুলতানা যৌথভাবে প্রসূতিকে অপারেশন করেন। অপারেশনে প্রসূতি ইয়াসমিন পুত্র সন্তান লাভ করেন। এরপর প্রসূতির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে তার রক্তচাপ কমে যায়। তখন তড়িঘড়ি করে ক্লিনিক মালিক এবং ডাক্তারেরা অসুস্থ রোগীকে খুলনায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পথিমধ্যে তার মৃত্যু ঘটে। ৬ মার্চ সোমবার মৃত্যুবরণকারী ইয়াসমিনকে তার শ্বশুরবাড়ি আলমনগরে কবরস্থ করা হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে মৃত্যুবরণকারী ইয়াসিনের দাদা আছর আলী জানান – আমার পুত্নীকে ভুল চিকিৎসার কারণে মরতে হলো কি না জানিনা।
এ ব্যাপারে অপারেশন কাজে নিয়োজিত এনেসথেসিয়া ডাক্তার আবু সায়েম বলেন -সার্জন ডাক্তার নাজনীন সুলতানা আমার স্ত্রী। আমরা যৌথভাবে রোগীকে অপারেশন করি। তিনি এর বেশি কিছুই বলতে রাজি হননি।
আয়েশা ক্লিনিকের মালিক মাসুদ পারভেজ জানান,রোগীর অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল। অপারেশনের পর তার অবস্থা আরো খারাপ হয়। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনায় রেফার্ড করা হলে, তিনি পথিমধ্যেই মারা যান।
ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রশিদুল আলম বলেন, ঘটনা শুনেছি। কিন্তু ক্লিনিক মালিক কোনো তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেনা। তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোরের সিভিল সার্জন বিমল কান্তি বলেন, ক্লিনিকে রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। ঐ ক্লিনিকের বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে প্রথম স্ত্রীসহ স্বামীর মৃত্যুদণ্ড