দেলোয়ার কবীর, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের বিভিন্ন স্থানে ইদানিং বাড়ছে হনুমানের অ^ানাগোনা। মানবিকতা সম্পন্ন মানুষ এদের খাবার দিচ্ছে, আবার একশ্রেণির হীনমন্য মানুষ খাবারতো দিচ্ছেই না, উল্টো ওদের ধাওয়া করতে লেলিয়ে দিচ্ছে কুকুর, ছুড়ে মারছে ইটপাটকেল।
ফলে সংরক্ষিত বণ্যপানির জীবন এখন অনেকটাই বিপন্ন। এ ব্যাপারে জেলা বন বিভাগীয় কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসন বলছে যারা বন্যপ্রাণির প্রতি অন্যায় করছেন তাদের সাবধান হওয়া উচিৎ এ ধরনের কর্মকান্ড বণ্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনে দন্ডনীয় অপরাধ।
ইদানিং ঝিনাইদহের শৈলকুপা শহর ও সদরের সাধুহাটি এবং ডাকবাংলা এলাকায় বেশ কিছু হনুুুমানের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। ওরা লোকালয়ের পাশের গাছের ডাল বা বাড়ির ছাদে অবস্থান নেয়। স্থানীয়রা তাদের রুটি, বিস্কুট, পাউরুটি, কলা ইত্যাদি খেতে দিলে সহজেই গ্রহণ করে। কিছু কিছু হীনমন্য মানুষ এদের ভগবান রামের শিষ্য হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের পেছনে কোমলমতি শিশুদের তাড়া করতে উৎসাহ দেয়। তাদের ভাষ্য হিন্দু দেবতাভক্ত রামের শিষ্যরা বনেই থাকবে, লোকালয়ে নয়। তাদের এরকম কর্মকান্ডে কোথাও কোথাও মানুষের প্রতি বিরূপ আচরণও করছে কিছু হনুমান।
বন বিভাগের জেলা রেঞ্জ অফিসার সিরাজুল ইসলামের সাথে হনুমানের লোকালয়ে আসা, তাদের জন্য সরকারের করণীয় ও নিরাপত্তা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সীমান্তবর্তী ভবনগর গ্রামে প্রায় শ’দুয়েক হনুমানের জন্য সরকারিভাবে কিছু খাবার দেয়ার ব্যবস্থা করা হলেও অন্যান্য স্থানে তা করা সম্ভব হয়নি।
তিনি জানান, সদর উপজেলার ডাকবাংলা ও সাধুহাটি এলাকায় বেশ কিছু হনুমান চলাফেরা করছে যাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি গর্ভবতীও রয়েছে। এরা একাকি বা দু’ তিনজনের দলে গ্রামে ঘুরে বেড়ায় খাবারের সন্ধানে। নিরাপত্তার স্বার্থে এরা যেখানে পারে সেখানেই বাচ্চা প্রসব করছে।
কিছু মানুষ এদের কিছু খাবার দিলেও কিছু মানুষ অমানবিক আচরণ করে, কুকুর বা শিশুদের লেলিয়ে দেয়। এতে বিক্ষিপ্তভাবে চলাফেরাকারি এসব হনুমান কম বেশি আহতও হয়। কিন্তু তাদের জন্য না আছে খাবার, না আছে চিকিৎসার ব্যবস্থা।
ফলে সংগত কারণেই তাদের জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে নেয়া হলেও বণ্যপ্রাণির জন্য যে ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন, তা পায়না। গত কয়েক মাসে জেলায় তিনটি হনুমানশাবক তারা উদ্ধার করে নিজ দায়িত্বে চিকিৎসা দিচ্ছেন। চলাচলের ক্ষমতা হওয়ায় দুটিকে তারা ইতোমধ্যে জঙ্গলে ছেড়েও দিয়েছেন বলে জানান বন বিভাগীয় কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিয়া আক্তার চৌধুরি জানান, খাবারের জন্য বা যেকোন কারণে লোকালয়ে আসা বণ্যপ্রাণি হনুমান বা যেকোন বণ্যপ্রাণিকে আঘাত করা বা শিকার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এসব থেকে বিরত থেকে তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করতে তিনি সবার প্রতি অনুরোধ জানান।