দেলোয়ার কবীর, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহে সেচের মাধ্যমে পুকরের পানি বের করায় কৃষকের পাকা ধান ও ধানের বীজতলা নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকালে সদর উপজেলার বাদপুকুরিয়া গ্রামের মাঠে ৪০ বিঘা জমির পাকা ধান ও ধান বীজতলা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার অভিযোগে নজরুল নামে এক কৃষক বাদী হয়ে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
সরোজমিন দেখা যায়, বাদপুকুরিয়া গ্রামের মাঠে পাকা ধান কাটা চলছে। চারিদিকে জমির মাটি শুকনো থাকার কারনে সকল কৃষক মাঠেই ধান শুকায়ে গোখাদ্য বা বিচালি করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বর্ষাকালে মাঠের পানি নিষ্কাষনের জন্য যে খাল ব্যবহার করা হয়, সেই খাল দিয়েই মাঠে ঢুকছে পানি।
ওই পানিতে তলিয়ে গেছে পাকা ধান ও বীজতলা। কয়েকজন কৃষক ধানবীজতলার পানি সেচে চারাগুলো বাঁচানোর চেষ্টা করছে। এগুলো বৃষ্টির কোন পানি নয়, পুকুর থেকে বের করে দেয়া সেচের পানি। সেচ দিয়ে পুকুরের পানি বন্ধ না হলে ওই মাঠের কৃষকেরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাদপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলামের দায়ের করা লিখিত অভিযোগে জানা যায়, তিনিসহ মাঠের কৃষকেরা পাকা ধান কাটার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমতাবস্থায় ডহরপুকুরিয়া গ্রামের ওমর আলী ভূইয়া, করম আলী ভূইয়া, রেকমত আলী, কেরামত আলী এবং সামসুদ্দিন’রা দীর্ঘ ১৪/১৫ দিন ধরে রাতের আঁধারে পুকুরসেচা পানি কৃষকের পাকা ধানক্ষেতে বের করে দিয়ে আসছে।
কৃষকেরা বারবার ধানি জমিতে পানি দিতে নিষেধ করলেও কোন কর্ণপাত করেনি। এরপর তারা জমিতে পানি না ঢোকার জন্য খালের মুখে বাঁধ দেয়। তারপরও রাতের আধারে বাঁধ কেটে পাকা ধানক্ষেতে পানি দিয়ে আসছে। পরিকল্পিতভাবে পুকুরের পানি পাকা ধানক্ষেতে যাওয়ার কারণে ওই মাঠের কৃষকদের ১২ লাখ টাকা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
কৃষক আব্দুল কাদের আজিজুল, আব্দুল গাজি, সন্তোষ কুমার, আতা মিয়া ও নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘উপর থেকে কোন বৃষ্টি নেই। ভুইয়ারা পুকুর সেচতেছে, তাদের অনুরোধ করে বলেছিলাম, আপনারা পুকুর সেচা কয়টা দিন বন্ধ করেন। পাকা ধানগুলো গুছায়ে নিই, চারটে বিচালী হবে। তারপরও তারা কোন কথা শুনেনি। মাঠে ধান কাটতে এসে দেখি পানিতে ধান গুলো তলিয়ে গেছে, ধানবীজও নষ্ট হয়ে গেছে।’
এ ব্যাপারে ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ তৌহিদুল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগিরা থানায় লিখিত অভিযোগ করলে থানা থেকে তাকে অবহিত করা হয়েছে এবং সরেজমিন পরিদর্শন করে সত্যতা পাওয়া গেছে। কৃষকের পাকা ধান ও বীজতলা ক্ষতি হয়েছে। পুকুর মালিকেরা যোগসাজসে পুকুর সেচে ধানি জমিতে পানি ঢুৃকিয়ে দেয়ায় এমন ক্ষতি হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।