নিজস্ব প্রতিবেদক
বেনাপোল স্থল বন্দরের হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যদের মধ্যে মারামারির ঘটনায় আরো আট জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত সোমবার তিন শ্রমিককে কুপিয়ে আহতের ঘটনার সূত্র ধরে বরখাস্তের ঘটনা ঘটে। তবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে নতুন করে ৮জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শ্রমিকদের একাংশ।
বরখাস্তরা হলেন, শ্রমিকনেতা মনিরুল ইসলাম, তার ছোট ভাই মুহিদুল ইসলাম, রাজু হোসেন, আনোয়ার হোসেন, সবুজ হোসেন, রিপন হোসেন, শওকত হোসেন ও তার ছোট ভাই হায়দার হোসেন। এর আগে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বেল্টুকে বহিস্কার করা হয়।
রঘুনাথপুর গ্রামের বাকের হোসেনের ছেলে শ্রমিকনেতা মনিরুল ইসলাম জানান, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের রোষানলে পড়ে তিনিসহ ৯ জন শ্রমিক বরখাস্ত হয়েছেন। হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ওহিদুজ্জামান ওহিদের কাছে হিসেব ও পাওনা চাওয়ায় বেনাপোলের বেশ কয়েকজন শ্রমিককে বন্দরে ঢুকতে দিচ্ছে না তারা।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন বেনাপোল বন্দরের হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের বিরুদ্ধে শ্রমিক নিপীড়ন ও অত্যাচারের অভিযোগ রয়েছে। তাদের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করে আসছেন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রাজু আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক ওহিদুজ্জামান ওহিদ। এসব বিষয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ শ্রমিকরা ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঁচ বছরের আয় ও ব্যয়ের হিসেব চান। গত ৪ সেপ্টেম্বর ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেল্টু ও তার ছোট ভাই রাজুকে পাওনা বুঝে দেয়ার কথা বলে অফিসে ডেকে নেন। এক পর্যায়ে রাজু ও বেল্টুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। তাদের দুজনকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বন্দর শ্রমিক বেল্টু ও রাজু বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রায় তিন কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা বেশ কয়েকজন শ্রমিক তাদের কাছে হিসেব চাইলে আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং ৪ সেপ্টেম্বর অফিসে হিসেব দেয়ার কথা বলে ডেকে কুপিয়ে জখম করে। উল্টো আমাদেরই বহিস্কার করেছে।
হামলার বিষয়ে হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ওহিদুজ্জামান ওহিদ বলেন দুই শ্রমিককে কুপিয়ে জখম করার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বলেন, শ্রমিকদের হিসেব দিতে আমরা বাধ্য নই। আর বহিস্কার বিষয়টি তার একার সিদ্ধান্ত নয়। এটা সংগঠনের সিদ্ধান্ত।
এ বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ ও হামলার ঘটনা শুনেছেন। বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা বিঘœকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।