নিজস্ব প্রতিবেদক : কিস্তিতে ফ্রিজ, টেলিভিশন, ফার্নিচার বিক্রি হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এবার মাইকিং করে কিস্তিতে গরুর মাংস বিক্রি শুরু হয়েছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ বেশ খুশী।
কিস্তিতে কেনার এই সুযোগ করে দিচ্ছেন যশোর শহরতলীর কাজীপুর গ্রামের নাহিদ হাসান, লালন হাসান, জাহিদ হাসান ও আবু সাঈদ নামে চার যুবক।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে কাজীপুর স্কুলের সামনে গেলে কিস্তিতে গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা যায়। বিক্রেতা লালন জানান, গ্রামের অনেকেই আছেন কোরবানি ঈদে গরুর গোশ খেয়েছেন। আর সামনের কোরবানিতে খাবেন। আমাদের এই উদ্যোগে তারা খুশি।
লালন বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে গ্রামবাসী। গ্রামের অধিকাংশই কৃষি কাজ বা দিনমজুর শ্রেণির। বাজারে গরুর মাংসের যে দাম সেই দামে এক কেজির টাকা যোগাড় করা তাদের পক্ষে কষ্টকর। তাই কোরবানি ঈদ এলে দান করা মাংস দিয়েই স্বাদ মেটান। চোখের সামনে এ অবস্থা দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায়। বছর খানেক আগে বন্ধুদের এক আড্ডায় কিস্তিতে মাংস বিক্রির পরিকল্পনা মাথায় আসে। তারপর এলাকার মুরব্বী ও সুধীজনদের সাথে আলোচনা করে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করি। সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতি শুক্রবার সকালে গরু জবাই করে স্থানীয়দের কাছে বাজার দরে বিক্রির করি। যে যার সামর্থ্য ও প্রয়োজন অনুযায়ী মাংস কেনে। মাংস কেনার সময় কোন টাকা না দিলেও পরবর্তীতে কেউ দুই বা তিন বারে টাকা পরিশোধ করেন। এভাবে টাকা পরিশোধ করতে অনেক সময় মাসও পার হয়ে যায়। যদিও আমরা বলি দুই সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধের জন্য। তারপরও দিন শেষে মনে পরিতৃপ্তি থাকে এই ভেবে যে, এলাকাবাসীর জন্য কিছু করতে পারছি। তার সাথে সুর মিলিয়ে জাহিদ হাসান ও আবু সাঈদ বলেন, আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্যে এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে পারছি এটাই বড় কথা।
মাংস ক্রেতা আলফাজ বলেন, শহরে গার্ডের চাকরি করি। যে বেতন পাই তা দিয়ে সপ্তাহে বা মাসে এক কেজি মাংস কেনার টাকা যোগাড় করা কঠিন। তাই এখান থেকে কিস্তিতে কিনি। কখনো দুই বারে আবার কখনো তিন বারে টাকা পরিশোধ করি। এভাবে কিনতে পারায় অন্তত মাসে একবার হলেও পরিবারের মুখে মাংস তুলে দিতে পারছি। এটা যে কত খুশির তা বলে বোঝাতে পারবো না।
মাংস কিনতে আসা তরিকুল ইসলাম বলেন, কিস্তিতে গরুর মাংস বিক্রির ঘটনা এলাকায় এই প্রথম। বাড়িতে অনুষ্ঠান। তাই চার কেজি মাংস কিনে টাকা দিয়েছি ৮০০ টাকা। অবশিষ্ট টাকা তিন সপ্তাহে পরিশোধ করবো। আব্দুল জব্বার বলেন, কিস্তিতে না হলে কপালে মাংস জুটতো না। মাংস কিনতে আসা শিউলী, ফাতেমা, শাহেদা, আলী হোসেন, নূর হোসেন কিস্তিতে মাংস কিনতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান লাইফ বলেন, অবশ্যই ভালো একটা উদ্যোগ। তবে তাদের প্রতি আহ্বান থাকবে ভালো মানের সুস্থ গরু জবাই করে বিক্রির জন্য।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দীন বলেন, যুবকদের এমন উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। এমন মহতী উদ্যোগে সাথে আছি।
সর্বশেষ
- নারী বিভাগের ফাইনালে রিপন অটোস স্পোর্টস একাডেমি
- নেতাকর্মীর পদচারণায় মুখর যশোর বিএনপির কার্যালয়
- ঢাকাস্থ বৃহত্তর যশোর সমিতির নির্বাচনে মনোনয়নপত্র ক্রয়
- জিয়ার আদর্শ বিক্রি করে বিএনপি পাঁচবার দুনীর্তিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে : যশোরে ফয়জুল করীম
- সব স্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা প্রবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন
- যশোরে কৃত্রিম সংকটের নামে বাড়তি দামে সার বিক্রি
- যশোরে অনূর্ধ্ব-১৫ বালক ও বালিকা সাঁতার প্রতিযোগিতা মঙ্গলবার
- যশোরে প্রথমবার ৩ এক্স ৩ বাস্কেটবল