নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু প্রতিরোধে যশোর পৌর এলাকাসহ পুরো জেলায় সংশ্লিষ্টদের মশক নিধন কার্যক্রম জোরালো করার নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় তিনি এই নির্দেশনা দেন। সভায় যশোর-নড়াইল সড়কের চলমান উন্নয়ন কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করার লক্ষে সরকারি নিয়মানুযায়ী গাছ কেটে প্রশস্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। আগামী ঈদুল আজহার কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুচারুভাবে সম্পন্ন করা এবং চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একইসাথে চামড়াবাহী কোনো গাড়ি সীমান্তমুখি যেতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় জানানো হয়, বিশুদ্ধ পানি ও নিরাপদ খাবার খাওয়ার ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টি হওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ কমে এসেছে। সভায় চলমান উন্নয়ন কর্মকা- এগিয়ে নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, বর্ষাকাল শুরু হয়েছে। এজন্য ড্রেন গুলো পরিষ্কার রাখতে হবে। কোথাও পানি জমে যাতে ডেঙ্গু মশার জন্ম না নেয়। এ বিষয়ে সতর্কও থাকতে হবে। জেল রোড, হাসপাতাল রোডে যানজট নিরসনে কাজ করতে হবে।
সভায় জানানো হয়, ‘ভৈরব নদ থেকে ছোট ছোট ব্রিজ অপসারণের জন্য কাজ চলমান রয়েছে। ভৈরব নদে দূষণকারীদের চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা চিঠি না মানলে ব্যবস্থা নেয়া নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ভৈরব নদ খননে দৃষ্টিনন্দন কেড়ে নিয়েছে নদে কচুরিপানা। একই সাথে ভৈরব নদের খনন ও উচ্ছেদ বিষয়ে নানা সমালোচনা হওয়াতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির অনেক সদস্য। তাই দ্রুত ঈদের আগে উপশহর বাবলাতলা ব্রিজ থেকে কাঠেরপুল ব্রিজ পর্যন্ত ভৈরবের কচুরিপানা অপসারণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুতই মনিহারের সামনের বিজয় স্তম্ভের চারিপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। এর আশেপাশে গড়ে উঠা অবৈধ টেম্পু বা তিন চাকার যানবাহনের কোন স্ট্যান্ড থাকবে না। মনিহার থেকে মুড়লি রাস্তার উপর পরিবহন থামিয়ে রাখার কারণে কাজের সমস্যা হচ্ছে। এজন্য পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক।
কোরবানির পশু পর্যাপ্ত আছে। সংকটের সম্ভাবনা নেই। তবে হাটে নিরাপদে ক্রেতাবিক্রেতার লেনদেনের জন্য ক্যাশলেস মেশিন বসানো হবে। যাতে জাল নোট দিয়ে কেউ লেনদেন করতে না পারে। যশোরে শহরে দিনকে দিন যানজটে ভোগান্তি তীব্র আকারে ধারণ করছে। যানজট প্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সেগুলো নিরসনে ভুমিকা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। একই সাথে অভয়নগরের কিছু রেলক্রসিংয়ের সঙ্গে সংযোগ সড়ক বেহাল অবস্থা। এসব রাস্তার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব রাস্তা সংস্কারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হুসাইন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশ, অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম মমিনুল ইসলাম, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রাশেদুল হক, জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা লুৎফর রহমান, যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ, যশোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকসিমুল বারী অপু, সাংবাদিক ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল ও সাজ্জাদ গনী খান রিমন প্রমুখ। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।