নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে জুম্মান হোসেন (৩৮) নামে চিহ্নিত এক সন্ত্রাসীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় শহরের রেলস্টেশনের পুকুরপাড়ে এই হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত জুম্মান হোসেন শহরের শংকরপুর জমাদ্দারপাড়ার পকেটমার মুরাদ হোসেনের ছেলে।
নিহত জুম্মানের নামে যশোর কোতোয়ালি থানায় প্রায় দেড় ডজন মামলা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ভাইপো রাকিবের নেতৃত্বে প্রিন্স, ট্যাটু সুমন, আসিফ, ভোলা, রনি, পিচ্চি রাজা, পিচ্চি হাসান, সবুজ, ও মুরাদসহ কয়েকজনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। অপরদিকে জুম্মান অন্য একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সাথে চলাফেরা করে। তাদের আধিপত্য এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। একসময় উভয় গ্রুপের সন্ত্রাসীরা একই সাথে চলাফেরা করতো। সম্প্রতি বিরোধের কারণে তাদের মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় জুম্মানকে ডেকে ওই সন্ত্রাসীরা রেলস্টেশনের দক্ষিণপাশে পুকুর পাড়ে আসাদুজ্জামান মিঠুর অফিসের পাশে নিয়ে যায়। এরপরই তারা জুম্মানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। পরে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন দিকে চলে যায়। জুম্মানকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক সাবিক মোহাম্মদ আল হাসান মৃত ঘোষণা করেন।
জুম্মানের ভাই মামুন হোসেন জানান, জুম্মানের সাথে কারো কোন বিরোধ ছিলো না। জুম্মান পানের ব্যবসা করতো। সন্ধ্যায় তার মোবাইলে ফোন আসলে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।
জুম্মানের খালা লিপি বেগম বলেছেন, ভাইপো রাকিবের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী পূর্ব বিরোধের জের ধরে জুম্মানকে খুন করেছে।
এই ঘটনার পর থেকে জেলা পুলিশ, ডিবি, সিআইডি ও পিবিআই এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা সন্ত্রাসীদের আটকের জন্য বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি বা কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেসন্স) পলাশ বিশ^াস বলেছেন, নিহত জুম্মানের নামে অস্ত্র, বোমাবাজি, চাদাবাজি, ছিনতাই মাদকসহ দেড় ডজন মামলা রয়েছে। হত্যার সাথে জড়িতদের আটকে অভিযান চালানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তারা মাঠে নেমেছেন। অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জুম্মান হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটন এবং খুনিদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, রেলস্টেশনের দক্ষিণ পাশে প্রতিনিয়ত অবৈধ, অস্ত্র, মাদক বিক্রি, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, বোমাবাজসহ নানা ধরণের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হয়ে আসছে।