নিজস্ব প্রতিবেদক
কনকনে শীতে কাঁপছে যশোরের মানুষ। ঘন কুয়াশা আর মৃদু শৈতপ্রবাহে এ জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অন্যরা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হলেও বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ।
যশোর বিমানবাহিনীর আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার (০৫ জানুয়ারি) যশোরে ছিল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ভোর সাড়ে ৬ টায় এ জেলায় সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
বিরাজ করছে মৃদু শৈতপ্রবাহ। শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) তাপমাত্রা আরও কমার শঙ্কা রয়েছে। এর আগে বুধবার (৪ জানুয়ারি) যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত দুই দিন দেখা মেলেনি সূর্যের।
যশোর শহরের দড়াটানায় ফেরি করে পেয়ারা বিক্রি করছিলেন মণিরামপুরের মোসলেম আলী। তিনি বলেন, প্রতিদিনই গ্রাম থেকে পেয়ারা এনে বিক্রি করেন শহরে। বিক্রি শেষে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু গত দুই দিন অর্ধেকও বিক্রি হয়নি। ক্রেতা কম। শহরে মানুষের উপস্থিতিও অপেক্ষাকৃত কম।
শহরের ধর্মতলা তদমতলা এলাকার বাসিন্দা রিকশা চালক মিজানুর রহমান বলেন, প্রচণ্ড শীতে মানুষের উপস্থিতি কম। যাত্রী কমে গেছে। কিন্তু ঘরে বসে থাকারও উপায় নেই। দিনআনা দিন খাওয়া সংসার। তাই বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি।
যশোর সদর উপজেলার চুড়মনকাটি ইউনিয়নের আবদুলপুর গ্রামের কৃষক আমিন উদ্দিন বলেন, ‘শীতে ঠান্ডা লেগে দুদিন ধরে গায়ে জ্বর। তারপরেও ঠান্ডায় মাঠে আসতে হয়েছে। মাঠে কাজ না করলে পেটে ভাত জুটবে না।’
এ দিকে ঠান্ডার কারণে জেলায় বেড়েছে জ্বর, সর্দিকাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। হাসপাতালে বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা। যশোর ২৫০ জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আবদুস সামাদ বলেন, শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
অন্যদিকে তীব্র শীতে কদর বেড়েছে গরম কাপড়ের। শীত নিবারণে মানুষ ছুটছে গরম কাপড়ের খোঁজে। গত তিনদিন ধরেই শহরের পুরনো কাপড়ের নিক্সন মার্কেট ও কালেক্টরেট মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। পুরানো কাপড় মাকের্টের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম, বাবু রহমান বলেন, ‘শীত পড়ায় প্রচুর পরিমাণে বেলভাঙ্গা কাপড় বিক্রি হচ্ছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের গরম কাপড়ে চাহিদা বেশি।’