নিজস্ব প্রতিবেদক
নিখোঁজের ৬ বছর পরে কঙ্কালের সূত্র ধরে রাজিব হোসেন কাজী (৩২) হত্যা মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। এই চার্জশিটে এক পুলিশ সদস্যসহ ৫জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। একই সাথে এই মামলায় ইতিপূর্বে গ্রেপ্তার দুইজনকে অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরের এসআই জিয়াউর রহমান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেছেন।
অভিযুক্তরা হলো, যশোর শহরের পুরাতন কসবার আজিজুল হকের ছেলে সজিবুর রহমান, শহরতলীর পাগলাদাহ গ্রামের সোহরাব আলী খানের ছেলে হুমায়ুন কবীর খান বাবু, শহরের বেজপাড়া পিয়ারী মোহন রোডের মৃত মনিরুল হকের ছেলে সাইফুল হক লিটন, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লঙ্কারচর গ্রামের আবুল হাসানের ছেলে পুলিশ সদস্য খারুজ্জামান শিহাব এবং একই উপজেলার মঙ্গলহাটা গ্রামের মৃত নুর মিয়ার ছেলে যশোর সদর উপজেলার কেসমত নওয়াপাড়ার বাসিন্দা সালাম।
এই মামলায় অব্যাহতি পাওয়া দুইজন হলো, যশোর শহরের পুরাতন কসবা নিরিবিলি পাড়ার গোলাম মোস্তফার ছেলে জয়নাল হাওলাদার ও লিচুতলার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে ইব্রাহিম মোল্লা।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৩০ মে রাতে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানাধীন পুরাতন কসবা নিরিবিলি পাড়ায় একটি নীল রঙের প্লাস্টিকের ড্রামের মধ্যে মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি উদ্ধার করে। ওই এলাকার বজলুর রহমানের বাউন্ডারি দেয়াল ঘেরা জায়গায় ভবন নির্মাণের জন্য খোঁড়ার সময় পরিত্যক্ত পুরাতন টয়লেটের কুয়ার ভেতর থেকে তা উদ্ধার করা হয়। এরপরই পিবিআই যশোর জেলার সদস্যরা ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে কঙ্কালগুলো রাজীবের বলে শনাক্ত করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ফারুক হোসেন বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জিয়াউর রহমান জানান, সেই কঙ্কালের সূত্র ধরে সাড়ে সাত মাস পর রাজীব হোসেন কাজীর লাশ শনাক্ত করা হয়। পুরাতন কসবার আবু তালেব সড়কের শেখ সজিবুর রহমানের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসাবে কাজ করতো রাজীব।
প্রথমে রিক্সাচালক মোহাম্মদ সালামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে লাশ বহনের রিক্সাটি জব্দ করা হয়। এরপর সবই বের হয়ে আসে। মূলত সিহাবুর রহমানের আত্মীয়কে নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। মেয়েলি ঘটনাকে কেন্দ্র করে হত্যা করা হয় রাজীবকে।
পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সালাম (৫৫) নামের এক জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত সালাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপরই বেরিয়ে আসে এই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য। তবে এই হত্যাকাণ্ডে মূলহোতা শেখ সজিবুর রহমান আরেকটি হত্যা মামলায় জেলহাজতে থাকায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন।
