নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের শার্শায় বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেনের ওরফে আইনালের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক পেট্রোল পাম্প দখলের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার বাগআঁচড়া সাতমাইল এলাকায় গোলাম কিবরিয়া ফিলিং স্টেশন নামে একটি পেট্রোল পাম্পে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পেট্রোল পাম্পের সত্ত্বাধিকারী তনিমা তাসনুমা বাদী হয়ে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেনসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ১২-১৩ জনের বিরুদ্ধে শার্শা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন-উপজেলার বসতপুর গ্রামের ৮ নম্বর বাগআঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও তার ভাই জামাল হোসেন, বেনাপোল পোর্ট থানার ভবেবেড় গ্রামের ইব্রাহীম হোসেন, বাগআঁচড়া গ্রামের মাসুদ ও সোহাগ হোসেনসহ ১২-১৩ জন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তনিমার বাবা গোলাম কিবরিয়া ১৯৯৫ সালে বাগআঁচড়ায় ১৭ শতক জমি কিনে মেসার্স গোলাম কিবরিয়া ফিলিংস স্টেশন নামে একটি পেট্রোল পাম্প স্থাপন করেন। ২০২২ সালে তার মৃত্যুর পর থেকে বিবাদীরা ভুয়া দলিল দেখিয়ে একাধিকবার দখলের চেষ্টা চালায়। শুক্রবার সকালে তারা লাঠিসোটা ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে পাম্পে প্রবেশ করে গেইট ভাঙার চেষ্টা করে, ম্যানেজারকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং চাবি ও কাগজপত্র নিয়ে পাম্প থেকে বের করে দেয়। পরে পাম্পে তালা ঝুলিয়ে সাইনবোর্ডের নাম মুছে ফেলা হয়। অভিযোগে প্রায় ৪০ লাখ টাকার তেল মজুদ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী তনিমা তাসনুমা জানান, আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ১২-১৩ জনের একটি দল শুক্রবার সকালে আমার পাম্প দখল করে। পরে পাম্পের ম্যানেজার, নজেল ম্যান ও নাইট গার্ডকে মারধর এবং গলায় চাইনিজ কুড়াল ধরে পাম্প থেকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এসময় তারা সাইনবোর্ডে গোলাম কিবরিয়া ফিলিং স্টেশনের নাম সাদা রং দিয়ে মুছে দেয়। খবর পেয়ে আমি ৯৯৯-এ ফোন দিলে তারা বাগআঁচড়া পুলিশ ফাঁড়িকে বিষয়টি জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও থানায় গেলে আনোয়ার তাদের গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমার পাম্পে ৪০ লাখ টাকার তেল রয়েছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম বলেন, আমার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির ৩০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। বেনাপোল ও যশোরের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে তিনি জাল আইডি ব্যবহার করে ৫০ কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত ১২ মে রাতে শার্শা থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি একাধিক মামলার আসামি এবং আদালতের রায়ে এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। এ নিয়ে ১৩ মে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
শার্শায় পেট্রোল পাম্প দখলের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
২ Views